Advertisement
E-Paper

পিছনে যান, হুকুম বনকর্তাদেরই

ছিল বন দফতরের অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে সূচনা হওয়ার কথা ছিল বন্যপ্রাণ দিবসের।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৪
ভারতী ঘোষ

ভারতী ঘোষ

ছিল বন দফতরের অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে সূচনা হওয়ার কথা ছিল বন্যপ্রাণ দিবসের। কিন্তু তাঁর নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে বন দফতরেরই ছয় কর্তাকে মঞ্চে পিছনের সারিতে বসতে বললেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। যার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্চ ছাড়লেন ওই কর্তারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দফতরের প্রধান সচিব সিনিয়র আইএএস অফিসার চন্দন সিংহও। মঙ্গলবার সরকারি অনুষ্ঠানে এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে আমলা শিবিরে।

পুলিশ সুপারের আচরণে ক্ষুব্ধ বনকর্তারা তাঁদের দফতরেরই অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। খবর পৌঁছয় স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে-র কাছে। তাঁর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ বনকর্তাদের সসম্মানে মঞ্চে বসার ব্যবস্থা করতে বলেন পুলিশ
সুপারকে। পুলিশই ফের বনসচিব-সহ অন্য কর্তাদের মঞ্চে ডেকে আনে। মুখ্যমন্ত্রীর কানেও যায় ঘটনাটি। বন্যপ্রাণ দিবসে পুরস্কার বিতরণের সময় মুখ্যমন্ত্রী বনকর্তাদের ডেকে নেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক কর্তা জানান, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বনসচিব চন্দন সিংহ, মুখ্য বনপাল প্রদীপ ব্যাস এবং বনরক্ষীদের প্রধান প্রদীপ শুক্ল-সহ ছ’জন বনকর্তা মঞ্চে এসে দ্বিতীয় সারিতে বাঁ দিকের শেষ প্রান্তে বসেন। কোন কোন কর্তা অনুষ্ঠানে থাকবেন তা আগে থেকেই জানতেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ওই সারিতে কয়েক জন জনপ্রতিনিধিও ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ।

পৌনে একটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক মহিলা জওয়ান বনকর্তাদের জানান, তাঁদের একেবারে পিছনের সারিতে গিয়ে বসতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। অন্যদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়। বনসচিব জানান, তাঁদের দফতরের অনুষ্ঠান। তাই দ্বিতীয় সারিতে একেবারে কোণের আসনেই তাঁরা বসবেন। এর পর পুলিশ সুপার নিজে এসে বনকর্তাদের বলেন, ‘‘আপনারা এখানে বসবেন না। পিছনে যান।’’ বনসচিব ফের বন্যপ্রাণ দিবসের কথা উল্লেখ করায় ভারতী দেবী জানান, তিনি সবই জানেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার ভার তাঁর। তাই বনকর্তাদের সরে যেতে হবে। দ্বিতীয় সারিতে কেবল খেলোয়াড়রা বসবেন। এ দিন ওই মঞ্চেই বন দফতরের অনুষ্ঠানের পরে ছিল জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ।

এর পর মঞ্চ থেকে নেমে যান বনসচিব ও বনকর্তারা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক কর্তা বলেন, ‘‘বনসচিব কলকাতায় ফেরার জন্য গাড়িও ডেকে নিয়েছিলেন। এমন সময় স্বরাষ্ট্রসচিব তাঁকে ফোন করে অনুষ্ঠানে থাকার কথা বলেন।’’ ভারতী অবশ্য ক্ষুব্ধ বনকর্তাদের ধারে কাছে আর যাননি। এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গিয়ে তাঁদের মঞ্চে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় সারিতেই বসার ব্যবস্থা করেন।

রাজ্য প্রশাসনের সিনিয়র কর্তাদের যে ভাবে ‘অপমান’ করা হয়েছে, তা নিয়ে আমলাদের অনেকেই অসন্তুষ্ট। চন্দনবাবুর সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসের জবাব দেননি। পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

Bharati Ghosh Forest Officers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy