Advertisement
E-Paper

প্লাবিত উত্তরে মৃত্যু আরও চার জনের

তিন জেলার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের অবস্থা খুবই খারাপ। আত্রেয়ীতে জল এখনও কমেনি। এ দিন সকালে জেলাশাসক জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করছিলেন।

শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৭ ০১:১৯
সাহায্যের-হাত: বালুরঘাটের বন্যা কবলিত এলাকায় পুলিশ সুপার নামলেন উদ্ধারকাজে। ছবি: অমিত মোহান্ত।

সাহায্যের-হাত: বালুরঘাটের বন্যা কবলিত এলাকায় পুলিশ সুপার নামলেন উদ্ধারকাজে। ছবি: অমিত মোহান্ত।

উত্তরের এক দিকে যখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, অন্য দিকে তখন বানভাসি। বিহার থেকে জল ছাড়ায় এবং আত্রেয়ী-সহ কিছু নদীতে জল না কমায় মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে বহু মানুষ ঘরছাড়া। কেউ বাঁধে, কেউ স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন। পর্যাপ্ত ত্রাণ না পৌঁছনোয় ক্ষোভও দেখা দিয়েছে বেশ কয়েকটি জায়গায়। প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে, দ্রুত যাচ্ছে ত্রাণ পৌঁছয় ও উদ্ধারের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়, সেই চেষ্টাই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও চার জনের।

তিন জেলার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের অবস্থা খুবই খারাপ। আত্রেয়ীতে জল এখনও কমেনি। এ দিন সকালে জেলাশাসক জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করছিলেন। তখন সেখানে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সব খোঁজখবর নেন। তার পরে চাহিদা মতো বাড়তি ত্রিপল পাঠাতেও বলেন। আজ, বুধবার সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বালুরঘাট পৌঁছবেন।

আরও পড়ুন: ডালখোলা-গুয়াহাটি ট্রেন চালাবে রেল

এর মধ্যে এ দিন বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকায় গিয়ে বন্যার্তদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বালুরঘাটের বিডিও কৌশিক চট্যোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েত সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা প্রবীর রায়। ত্রাণ না পেয়ে বিক্ষোভকারীরা বাঁশ তুলে তাদের দিকে ধেয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ বংশীহারি ব্লকের নারায়ণপুরের উত্তর লক্ষ্মীপুর এলাকায় রাস্তা পাড় হতে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে গণেন্দ্রনাথ মাহাতো (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত রাতে একই থানার জোড়দিঘি এলাকায় জলে ডুবে সুফল মুর্মু (৪৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। এ দিন সকালেই বালুরঘাটের চকভৃগু অঞ্চলের আখিরাপাড়ায় আভারাণী সরকার নামে ৮০ বছরের বৃদ্ধা জলে পড়ে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এলাকা জলে ডুবে থাকায় বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়নি বলে আত্মীয়দের অভিযোগ। বাড়িতে জলবন্দি অবস্থায় তিনি মারা যান বলে দাবি। জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে মংলু সিংহ (৫০) নামে এক ব্যক্তির।

তপনের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, ‘‘চার দিকে খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। নৌকার এবং বিপর্যয় মোকাবিলা-টিমের অভাব রয়েছে। বাইরের জেলা থেকে উদ্ধারকারী দল ও স্পিডবোট আনার চেষ্টা হচ্ছে।’’

বিহারের ধুবল সিদকিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে ফুলহরের জলে প্লাবিত মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ ব্লক, চাঁচল ১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। চাঁচল মহকুমার ৫০ হাজার মানুষ জলবন্দি। হরিশ্চন্দ্রপুরে প্রায় ৪০০ ত্রিপল লুঠ করে বানভাসি মানুষদের একাংশ। এলাকাগুলির বিভিন্ন বাঁধে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন। আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধারে বিএসএফের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী আসছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

এ দিন ফুলহরের জলস্তর কমে ২৮.৭৭ মিটার হলেও তা চরম বিপদসীমার ওপর দিয়েই বইছে। বানভাসি হওয়া এলাকার বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত নতুন করে বিহার থেকে আসা ফুলহরের জলে প্লাবিত হয়েছে। উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় নৌকা বা স্পিড বোটের সংখ্যা কম। এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য শেখ খলিল বলেন, প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় হারিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফে ত্রাণ পাঠানোর বা উদ্ধারের পরিকাঠামো নেই। প্রশাসন জানায়, ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা চলছে। পাশাপাশি উদ্ধারেরও চেষ্টা চলছে।

উত্তর দিনাজপুরের রায়গ়ঞ্জে জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে জল বইছে। এই তিন জেলার বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ। সড়ক পথে কোনও মতে কিছু গাড়ি চলছে। কিন্তু তা-ও অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে দাবি প্রশাসনের।

শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতে এ দিন কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। তবে দুপুরের পরে রোদেরও দেখা মিলেছে।

North Bengal Death Flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy