দিলীপ ঘোষের শ্রদ্ধা। শুক্রবার রবীন্দ্র সদনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বর্যীয়ান নেতা হিসেবে। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বর্ণময় রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ভাবে জড়িত কংগ্রেস। সেই আবেগ মনে রেখেই সুব্রতবাবুর মরদেহে জড়িয়ে গেল কংগ্রেসের পতাকা। রবীন্দ্র সদনের ভিড় ঠেলে প্রয়াত নেতার দেহে শুক্রবার দলের পতাকা দিয়ে গেলেন কংগ্রেসের এক কর্মী। রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, তৃণমূলের নেতা-বিধায়ক ও প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা তখন উপস্থিত।
প্রায় ১১ বছর আগে দ্বিতীয় বারের জন্য যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিয়েছিলেন সুব্রতবাবু, তখনও তিনি যৌথ ভাবে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তখন প্রণব মুখোপাধ্যায়। যাঁর সঙ্গে কার্যনির্বাহী সভাপতির যৌথ দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছিলেন, সেই প্রদীপ ভট্টাচার্য এ দিন গিয়েছিলেন রবীন্দ্র সদনে। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির পাশাপাশি সুব্রতকে নিয়ে কংগ্রেসে অন্য রকমের আবেগ ছিল। পরে ওঁর দল বদলে গেলেও মনের বদল হয়নি।’’
প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, এক কালে প্রিয়-সুব্রতের অনুগামী কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীরাও গিয়েছিলেন রবীন্দ্র সদনে শ্রদ্ধা জানাতে। মান্নানের বক্তব্য, ‘‘১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শোচনীয় বিপর্যয় এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর পরাজয়ের ফলে দলের কর্মীদের হতাশা দূর করে এই রাজ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সুব্রতদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সব সময়েই আমরা যে একই দলে থেকেছি, তা নয়। কিন্তু সম্পর্কে কখনও তিক্ততার সৃষ্টি হয়নি। আমার ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের শিক্ষাগুরু সুব্রতদা।’’
তৃণমূলের মেয়র হয়েও কংগ্রেসের কেন বিধায়ক ছিলেন সুব্রতবাবু, সেই প্রশ্নে দু’দশক আগে বিতর্ক ছিল। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি থেকে কংগ্রেসে সুব্রতবাবুর
ভূমিকা এবং অন্য পথে চলে যাওয়ার পরেও পুরনো দলের নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের নিরিখে সুব্রতবাবুর দেহ প্রদেশ কংগ্রেসের দফতর বিধান ভবনে ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে পারলে ভাল হত, এমন আক্ষেপ রয়েছে দলের নেতাদের একাংশের। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য ছিলেন বহরমপুরেই। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গত ১ নভেম্বর এসএসকেএম হাসপাতালে দেখা করে এলাম, গল্প করলাম, সেই মানুষটা আর নেই, ভাবতে পারছি না! বাংলার কংগ্রেস রাজনীতির ত্রিমূর্তি প্রিয়, সুব্রত, সোমেন এক এক করে চলে গেল। পরিষদীয় রাজনীতিতে এক জন অসামান্য ব্যক্তিত্ব, দক্ষ প্রশাসক, হাসি-খুশি, খোলামেলা অথচ বিজ্ঞ রাজনীতিবিদের নাম সুব্রত মুখোপাধ্যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy