Advertisement
E-Paper

বাঁচল গড়, তবু মনে খুশি নেই অনুব্রতের

হেঁয়ালি, বিবিধ টিপ্পনীর সঙ্গে মিঠে-কড়া বিবিধ বুলি— এত দিন তামাম রাজ্য বীরভূম এই মেজাজেই দেখে এসেছে জেলা তৃণমূলের সভাপতিকে। ভোটের আগে টানা প্রচারে অনুব্রত কখনও পাঁচন, সিরিঞ্জ আবার কখনও নকুলদানা প্রসঙ্গ তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন।

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায় ও শুভদীপ পাল

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৪:৩৩
দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

দলের ৪২-এ ৪২ হয়নি। বিজেপি দেশে ১২০টির বদলে ঢের বেশি আসন পেয়েছে। আসানসোলেও বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় হইহই করে জয়ী হয়েছেন। ভোট-প্রচারে এই তিন প্রসঙ্গ টেনে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘ওগুলোর কোনওটাই হবে না। হলে রাজনীতিই ছেড়ে দেব!’’ বৃহস্পতিবার, ফল ঘোষণার পরে সে কথা মনে করালে বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জবাব, ‘‘এমন বলেছিলাম নাকি! রাজনীতিতে অমন অনেক কথা বলতে হয়। নরেন্দ্র মোদীও তো বলেছিলেন ১৫ লক্ষ টাকা দেবেন। দিয়েছেন কি?’’

হেঁয়ালি, বিবিধ টিপ্পনীর সঙ্গে মিঠে-কড়া বিবিধ বুলি— এত দিন তামাম রাজ্য বীরভূম এই মেজাজেই দেখে এসেছে জেলা তৃণমূলের সভাপতিকে। ভোটের আগে টানা প্রচারে অনুব্রত কখনও পাঁচন, সিরিঞ্জ আবার কখনও নকুলদানা প্রসঙ্গ তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন। নির্বাচন কমিশন নজরবন্দি করলেও পরোয়া করেননি। দাপট ছিল প্রচারেও। জেলা ঘুরে ঘুরে কর্মিসভা করে লোকসভার প্রার্থীকে জেতাতে দলের ব্লক সভাপতিদের কত ‘লিড’ দিতে হবে তাও বেঁধে দিয়েছিলেন। রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে আসন কমে গেলেও নিজের গড় অটুট রাখতে পেরেছেন অনুব্রত। কিন্তু, দুই আসনে জিতলেও কাঙ্ক্ষিত ফল হয়নি। নিজের খাসতালুক বোলপুরে তো জয়ের ব্যবধান এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে! যা চিন্তায় রেখেছে শাসক-শিবিরকে।

ফল প্রকাশের দিন তাই চেনা মেজাজে পাওয়া যায়নি এই দাপুটে তৃণমূল নেতাকে। চিন্তার ছাপ প্রথম থেকেই তাঁর চোখে-মুখে ছিল। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন কম। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়েও গলার স্বর ছিল নিচু। রাজ্যে দলের এই ফলের ব্যাখ্যায় অনুব্রতের মুখেও উঠে এসেছে সিপিএমের নাম। এক সময় যাদের সঙ্গে লড়াই করে বীরভূমে তৃণমূলকে দাঁড় করিয়েছেন, সেই সিপিএমের ভোট কমে যাওয়ার আক্ষেপ শোনা গিয়েছে অনুব্রতের গলায়। বাড়ি থেকে সিউড়ি যাওয়ার আগে বললেন, ‘‘দলটা একেবারে শেষ হয়ে গেল। আর উঠতে পারবে না।’’ দিনের শেষেও বলেছেন, ‘‘বিজেপির পুরো ভোট এসেছে সিপিএমের থেকে। ভালই হল। এ বার সরাসরি তৃণমূল-বিজেপি লড়াই হবে।’’ সিউড়িতে দলের জেলা কার্যালয়ে গিয়ে আবার অনেককে দুষে বলেছেন, ‘‘এ বার টাকা খাওয়াটা বন্ধ কর। দেখলি তো কী হল!’’

জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের ধারণা, বাম-কংগ্রেসের ভোট তো বটেই, বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের কিছু ভোটও বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে। তাতে এক ধাক্কায় জেলার ভোট শতাংশ বেড়ে গিয়েছে বিজেপির। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট হওয়ার জন্যই এমন ফল বলে মনে করছেন অনুব্রত। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে শীঘ্রই দলের তরফে বিবিধ পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। অনুব্রত বলছেন, ‘‘কিছু ভুল হয়েছে। ভেবেছিলাম খুব খারাপ হলেও রাজ্যে ৩৭টি আসন থাকবে। বোলপুরে কম করে সাড়ে তিন লক্ষ এবং বীরভূমে আড়াই লক্ষ লিড হবে। জিতলাম, কিন্তু ওটা আর হল কই!’’

Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 TMC Anubrata Mondal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy