তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
৩৪ থেকে নেমে ২২। লোকসভা ভোটে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে এই ফল অপ্রত্যাশিত ছিল। সেই ধাক্কায় ভোগগণনার পরের দিন বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও এক দিন পিছিয়ে আগামিকাল ২৫ মে দলের পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়ী এবং পরাজিত প্রার্থীদের পাশাপাশি জেলা সভাপতি, জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক এবং বর্ষীয়ান নেতা-নেত্রীদের বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, কেন এত বড় ধাক্কার মুখে পড়তে হল দলকে, সেই পর্যালোচনা ঘিরে কালকের বৈঠক উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা। দলের একটি সূত্রের দাবি, মমতার কালীঘাটের বাড়িতে ওই বৈঠকে প্রার্থীদের হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে হতে পারে মমতার কাছে।
রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে যত নির্বাচন হয়েছে, প্রতিটি নির্বাচনের পরের দিনই দলনেত্রী বৈঠক ডাকেন। কিন্তু সেই সব নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। ফলে সেই বৈঠক কার্যত দলনেত্রীর পিঠ চাপড়ানোর বৈঠক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তা ছাড়া সাংগঠনিক কিছু নির্দেশ, জয়ীদের পিঠ চাপড়ানো এ সবই ছিল ওই বৈঠকগুলির উপজীব্য।
কিন্তু, এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। নিজেদের আসন কমার পাশাপাশি বিজেপির বিপুল উত্থান। লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে ১৩৬টি বিধানসভায় হার। বিধানসভার উপনির্বাচনেও আটটির মধ্যে তিনটিতে জয়। বিজেপির জয় চারটিতে, একটিতে কংগ্রেস। সব মিলিয়ে অশনিসঙ্কেত বলেই মনে করছেন দলের নেতানেত্রীরা।
আরও পডু়ন: সকালেই আডবাণী, জোশীর বাড়িতে মোদী, বললেন, ‘আপনাদের জন্যই সাফল্য’
আরও পডু়ন: দক্ষতার পরীক্ষায় দুই সেনাপতিই ‘ফেল’
এই পরিস্থিতিতে কালীঘাটের বৈঠক এক দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আক্ষরিক অর্থেই সেটা হয়ে উঠেছে পর্যালোচনা বৈঠক। থাকছেন ৪২ কেন্দ্রের প্রার্থীরা। এ ছাড়া বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থীদেরও থাকতে বলা হয়েছে। যোগ দেবেন জেলাভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের পর্যবেক্ষক এবং বর্ষীয়ান নেতানেত্রীরাও।
দলীয় সূত্রে খবর, ২০টি আসনে হেরে যাওয়া যে হেতু তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল না, সে হেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে পর্যালোচনাতেই সবচেয়ে জোর দেবেন। কোন আসনে কেমন ফল হল, কেন এত আসনে হারতে হল, সমস্যা কোথায় ছিল— দলনেত্রীর কাছে তার জবাবদিহি করতে হবে সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতাদের। তৃণমূলের অন্দরের খবর, নেত্রীর কাছে জবাবদিহি করার পরিস্থিতি যে হেতু তৈরি হতে পারে, তাই বৈঠকে নেতাদের মধ্যে চাপান উতোরের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনকি, দলনেত্রীর সামনেই উঠে আসতে পারে একাধিক জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টিও।
সব মিলিয়ে কেন এত বড় বিপর্যয়, তার প্রাথমিক কাটাছেঁড়াটা কালকের বৈঠকেই হয়ে যাবে বলে মনে করছেন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy