মোর্চার আন্দোলনের মধ্যেই পাহাড়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রিসভার কারও সামনে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে নিষেধ করেছেন মোর্চা নেতৃত্ব। দল সূত্রের খবর, প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুযায়ী মিটিং-মিছিল করা হলেও মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাঁরা যাবেন, তাঁদের প্রতি সৌজন্য দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন খোদ বিমল গুরুঙ্গ। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির কথায়, তাঁরা ১ জুন থেকে ভাষা শেখার অধিকার নিয়ে আন্দোলন শুরু করছেন। কালো পতাকা টাঙানো, মিছিলের কর্মসূচিও রয়েছে। আন্দোলন চলবে ৮ জুন পর্যন্ত। তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিরোধিতা করছেন না।
পরিস্থিতির উপরে সতর্ক নজর রাখছে নবান্নও। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানান, আন্দোলনের নামে পাহাড়ে অশান্তির চেষ্টা হলে যে কেউ ছাড় পাবেন না সেটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে, জোর করে বাংলা চাপানো হচ্ছে, এই গুজব রটিয়ে স্কুল-কলেজ বন্ধ করানোর অভিযোগে গুরুঙ্গ সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সম্ভবত, সে কথা মাথায় রেখেই মেপে পা ফেলছেন গুরুঙ্গ।
মোর্চার অন্দরের খবর, তিন দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর রুদ্রমূর্তি ভাবাচ্ছে মোর্চার অনেককেই। কারণ, ছাড় পাচ্ছেন না দলের বিধায়ক, পুলিশ অফিসার কিংবা সচিব পর্যায়ের অফিসাররাও। সেই সঙ্গে পাহাড়ও মনে রেখেছে, ম্যাল চৌরাস্তায় সরকারি অনুষ্ঠানের সময়ে আলাদা রাজ্যের স্লোগান দেওয়ায় মাইক হাতে নিয়ে ধমকে তা থামিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে লাগাতার পাহাড়ে বন্ধের সময়ে প্রায় ২২০০ জন মোর্চা নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছিলেন। বন্ধ উপেক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রী কালিম্পঙে সভা করেছিলেন। সেখানে উপচে পড়েছিল ভিড়ও।
ঘটনাচক্রে, এ দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা কখনও বলিনি প্রথম ভাষা বাংলা করতে হবে। যে নেপালি পড়ছে পড়ুক। কিন্তু তিনটি ভাষার মধ্যে একটি বাংলা পড়তে হবে।’’ তাঁর কথায়, তবুও মোর্চা বাসিন্দাদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করলে ওঁদের পায়ের তলার মাটি পুরোপুরি সরে যাবে।’’ শিক্ষামন্ত্রী পাহাড়ের স্কুলগুলোর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে জানান, তাঁরা বন্ধে সামিল না হয়ে ক্লাস করালেই ছাত্রসমাজের প্রতি সুবিচার করবেন। পার্থবাবু বলেন, ‘‘ক্লাস না করিয়ে স্কুল বন্ধ করলে সরকার তো হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy