— ফাইল চিত্র।
অসমে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়েছে শনিবার। তাতে প্রায় ১৯ লক্ষ অসমবাসীর নাম বাদ পড়েছে। তাঁদের মধ্যে লক্ষাধিক গোর্খা জনজাতিভুক্ত বাসিন্দা রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার এই বিষয়টি নিয়ে টুইট করে উদ্বেগ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম বাদের প্রতিবাদে দার্জিলিংয়ের পাহাড় এলাকাজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে গোর্খাদের একাধিক সংগঠন। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে পাহাড়ের সমস্ত দলকে একত্রিত হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন বিনয়পন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং। এনআরসির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন জাপ, সিপিআরএম, ভারতীয় গোর্খা পরিসঙ্ঘও।
দার্জিলিং লোকসভা আসনের পাহাড় এলাকার ভোটারদের প্রায় পুরোটাই গোর্খা জনজাতিভুক্ত। লোকসভা নির্বাচনে এই আসন থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বিজেপির রাজু বিস্তা। এ দিন বহুবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য যে মোবাইল নম্বর সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দেওয়া হয়েছিল সেটি বন্ধ ছিল। মেসেজ করলেও রবিবার রাত পর্যন্ত কোনও উত্তর মেলেনি। সাংসদের ব্যক্তিগত সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। বিজেপির পাহাড় কমিটির সভাপতি মনোজ দেওয়ানের ফোনও এ দিন বেজে গিয়েছে, মেসেজ করলেও উত্তর আসেনি। বিনয় তামাং বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি ১ লক্ষ ৬৩ হাজারেরও বেশি গোর্খার নাম বাদ পড়েছে। ভোট নিয়ে এখন পাহাড়ের মানুষদের বিদেশি তকমা দিয়ে দেশ থেকে তাড়াতে চাইছে বিজেপি।’’
জিটিএর তথ্য বলছে পাহাড়ের বেশিরভাগ মানুষের কাছে জমির কোনও কাগজ নেই। দার্জিলিং, কার্শিয়াং বা কালিম্পংয়ের যে জমিতে তাঁরা বাড়িঘর করেছেন বা ব্যবসা করছেন সেই জমির কোনওটির মালিক বন দফতর, কোনওটি ডিআই ফান্ড কর্তৃপক্ষের। কোনওটি আবার সিঙ্কোনা বা চা বাগানের জমি। ইদানীং বিশেষ কমিটি তৈরি করে পাহাড়ের বাসিন্দাদের পাট্টা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বিনয়ের দাবি, জমির কাগজ না থাকলে খুব সহজেই কাউকে বিদেশি তকমা দেওয়া যাবে। অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারত এবং দেশের বিভিন্ন রাজ্যের গোর্খাদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলারও ডাক দিয়েছেন বিনয়। রবিবার দার্জিলিংয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করে তিনি জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁদের একটি প্রতিনিধিদল অসম যাবেন। আগামী সপ্তাহে কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁরা বৈঠক করবেন। এ দিন বিজেপির সহযোগী বিমলপন্থী মোর্চা ও অন্য দলের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিনয়।
বিমলপন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বজগাই বলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার স্বার্থে এনআরসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এনআরসির পক্ষে। পদ্ধতিগত কারণে কারও নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। তিনি ট্রাইব্যুনালে আবেদনের সুযোগ পাবেন। বিনয় তামাংদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের সঠিক প্রমাণ নেই। তাই তাঁরা এর বিরোধিতা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy