Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coal Mine

প্যাকেজ নিয়ে চিন্তা, শুনল সরকার অনুমোদিত কমিটি

বৃহস্পতিবারই ত্রাণ ও পুর্নবাসন প্যাকেজ নিয়ে প্রথম আলোচনা সভায় উপস্থিত আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশ দাবি তোলেন, তাঁরা কয়লা খনি চান না।

বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা কমিটির সদস্যদের। রবিবার।

বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা কমিটির সদস্যদের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

পাপাই বাগদি
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১৮
Share: Save:

বীরভূমের মহম্মদবাজারে, প্রস্তাবিত কয়লা খনির জন্য গঠিত সরকার অনুমোদিত কমিটির সদস্যদের সামনে নানা সংশয় ও উদ্বেগের কথা তুলে ধরলেন এলাকার কয়েক জন যুবক। তাঁদের প্রশ্ন, সকলে সঠিক ভাবে ক্ষতিপূরণ পুনর্বাসন পাবেন তো? সরকার বলেছে কয়লাখনির জন্য জমিদাতা প্রতিটি পরিবারের এক সদস্যের চাকরি হবে। সেই সদস্য কে হবেন, সেটা কাজ শুরুর আগেই স্পষ্ট করার দাবিও তোলেন ওই যুবকেরা।

ওই কমিটির আহ্বায়ক তন্ময় ঘোষ ও সদস্য চিকিৎসক সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ হরিণশিঙা মতিলাল মারান্ডি ফুটবল মাঠে স্থানীয় বেশ কিছু যুবকের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই সরকার ঘোষিত প্যাকেজ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন তারক টুডু, বিশ্বনাথ দত্ত, গোবিন্দ বাস্কি, গোবিন্দ কিস্কু এবং স্থানীয় মাঝি হাড়াম (মোড়ল) যোসেফ মারান্ডিরা।

বৃহস্পতিবারই ত্রাণ ও পুর্নবাসন প্যাকেজ নিয়ে প্রথম আলোচনা সভায় উপস্থিত আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশ দাবি তোলেন, তাঁরা কয়লা খনি চান না। পরে তাঁদের মোড়ল যোশেফ খনি বিরোধী অবস্থান থেকে সরে এলেও সংশয়ের কথা এ দিন স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। কমিটিকে উপস্থিত যুবকেরা বলেন, ‘‘বলা হচ্ছে প্রত্যেক পরিবারকে ৬০০ বর্গফুটের বাড়ি দেওয়া হবে। কিন্তু এখানে যত গরিব পরিবারই হোক, তারা কম পক্ষে চার-পাঁচ কাঠা জমিতে বসবাস করেন। কী ভাবে তাঁরা ওই ছোট বাড়িতে থাকবেন?’’ এক যুবকের প্রশ্ন, ‘‘বলা হচ্ছে, নলকূপ বসাতে ৫০০০ টাকা দেওয়া হবে। ওই টাকায় কী ভাবে নলকূপ বসানো সম্ভব?’’

খনি এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থ রক্ষায় বাসিন্দা ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করার জন্য নয় সদস্যের একটি কমিটি তৈরি হয়েছে অক্টোবরে। কমিটির তিন সদস্য শনিবারই বীরভূম পৌঁছন। পরিস্থিতি বুঝতে রবিবার তাঁরা এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানেই বাসিন্দারা তাঁদের জানান, কে বা কারা চাকরি পাবেন, তা স্পষ্ট করতে হবে সরকারকে। দাবি ওঠে জমির দাম সর্বত্র সমান করারও। শুধু বাসিন্দারাই নন, প্যাকেজের কিছু বিষয় পরিমার্জনের প্রয়োজন আছে বলে এ দিন দাবি করেছেন দু’টি আদিবাসী সংগঠন, আদিবাসী গাঁওতা ও ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের দুই নেতা নেতা রবীন সরেন ও ঘাসিরাম হেমব্রমও। তাঁরা বলেন, ‘‘সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বাসিন্দাদের ন্যায্য অধিকার পাইয়ে দেওয়ার জন্য সংগঠন পাশে থাকবে।’’

কমিটির সদস্যেরা এলাকার মানুষের কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন সিউড়িতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার পরে সায়ন্তনবাবু, তন্ময়বাবু বলেন, ‘‘কমিটির কাজ নিরপেক্ষ ভাবে এলাকার বাসিন্দাদের অবস্থান, তাঁদের সুবিধা অসুবিধার কথা তুলে ধরা। আমরা স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে সেটা বোঝার চেষ্টা করছি। যা উঠে এসেছে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে সেটা পৌঁছে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Mine Birbhum Deucha Pachami
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE