Advertisement
E-Paper

দরবাঁধা চিকিৎসা, খসড়া দিল রাজ্য

নবান্নের শীর্ষমহলের দাবি, ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলির কাছে চিকিৎসার খরচের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই তালিকা মূল্যায়নের পরে খরচ ক্ষেত্র বিশেষে কেমন হওয়া উচিত, তা বিবেচনা করে প্রস্তাবিত রূপরেখা তৈরি হয়েছে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫০

বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ন্ত্রণে আরও এগোতে চায় রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতালগুলির চিকিৎসার খরচ বেঁধে দিতে উপযুক্ত ব্যবস্থার ভাবনাচিন্তা করেছে রাজ্য।

নবান্নের শীর্ষমহলের দাবি, ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলির কাছে চিকিৎসার খরচের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই তালিকা মূল্যায়নের পরে খরচ ক্ষেত্র বিশেষে কেমন হওয়া উচিত, তা বিবেচনা করে প্রস্তাবিত রূপরেখা তৈরি হয়েছে। যা পাঠানো হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির কর্তৃপক্ষের কাছে। এ বিষয়ে হাসপাতালগুলির মনোভাব বুঝে নিয়ে ভবিষ্যতে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করা হবে। প্রশাসনিক কর্তাদের ব্যাখ্যা, খসড়া চূড়ান্ত হলে সরকারের নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ীই সাধারণের থেকে চিকিৎসার খরচ নিতে বাধ্য থাকবেন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের অবশ্য দাবি, সরকারের তরফে এমন কোনও প্রস্তাব এখনও পাননি। তবে হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোন চিকিৎসার কেমন খরচ, সরকার সেই তালিকা চেয়েছে। তার যথার্থতা সরকার পরীক্ষা করতেই পারে। প্রয়োজনে প্রস্তাব বা পরামর্শও দিতে পারে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’’

যদিও প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী এই কাজ করতেই পারে সরকার। শুধুমাত্র বিধানসভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে হবে। তিনটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করে চিকিৎসার খরচ বেঁধে দিতে পারে সরকার। সেই তালিকার বাইরে যেতে পারবে না হাসপাতালগুলি।’’

তবে এ ক্ষেত্রে আশঙ্কাও রয়েছে। গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠকে পরিষেবার খরচ এবং মান নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া এবং স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের পরে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে অন্তত তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘সম্প্রসারণ না হলে বেডের সমস্যা বাড়বে— এই আশঙ্কা রয়েইছে। কিন্তু ৬০০ টাকার ইঞ্জেকশনে ৬ হাজার টাকা নেওয়া হলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা যায় না। সুপ্রিম কোর্টও বলেছে, চিকিৎসার খরচ যেভাবে বেড়েছে, তা সরকারের দেখা উচিত।’’

বেসরকারি হাসপাতালগুলির কর্তাদের একাংশ জানান, প্রধানমন্ত্রী একই পথে হাঁটতে চাইলেও নীতি আয়োগ জানায়, আইনত বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থার আর্থিক সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সরকার। সে কারণে ‘মোদী কেয়ার’ স্বাস্থ্যবিমা (যার পরিধি সরকারি কর্মীদের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্যবিমার থেকে বেশি) চালু করছে কেন্দ্র। কারণ, বেশির ভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিমার আওতায় এলে ব্যবসার স্বার্থে সরকারের মূল্যতালিকা (বিমার নিরিখে) মানতে বাধ্য থাকবে হাসপাতালগুলি। বেসরকারি এক হাসপাতাল-কর্তাও বলেন, ‘‘জনসংখ্যার বড় অংশ সরকারি বিমার আওতায় এসে গেলে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বিকল্প চিন্তাভাবনা করতেই হবে।’’

তা হলে তো ‘মোদী কেয়ার’ মানতে হবে রাজ্যকে! যার বিরোধিতা ইতিমধ্যেই করেছে তারা।

Medical Expenses Private Hospitals State Government Nabanna Nursing Homes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy