Advertisement
E-Paper

গুরুংয়ের সঙ্গিনী পেমাকে সরাতে তৎপরতা

পাহাড়ের মানুষ তাঁকে ‘প্রেসিডেন্ট’-এর ছোট বৌ হিসেবেই জানে। তিনি মানে পেমা লামা। আর ‘প্রেসিডেন্ট’ মানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি বিমল গুরুং।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:০০
—ফাইল তিচ্র।

—ফাইল তিচ্র।

পাহাড়ের মানুষ তাঁকে ‘প্রেসিডেন্ট’-এর ছোট বৌ হিসেবেই জানে। তিনি মানে পেমা লামা। আর ‘প্রেসিডেন্ট’ মানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি বিমল গুরুং।

২০১৫ সালে পেমাকে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ-র স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর চাকরি দিয়েছিলেন গুরুং। তাঁর সেই বান্ধবী এক বছরেরও বেশি নিরুদ্দেশ। জেলা প্রশাসন এখন পেমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কারণ, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি স্কুলে যাচ্ছেন না। এই দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণও দেখাননি। তাই তাঁকে বরখাস্ত করা উচিত বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পেমা আদতে জলপাইগুড়ির মেয়ে। ২০০৭-’০৮ সাল নাগাদ গরুবাথানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নারী বাহিনীর এক প্রশিক্ষণ শিবিরে বিমলের নজরে পড়েন তিনি। এবং খুব দ্রুত ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন ‘প্রেসিডেন্ট’-এর। পুলিশের খবর, গুরুং কখনও দিল্লি, কখনও কাঠমান্ডু যাতায়াত করছেন। সঙ্গী একমাত্র পেমা। এ-হেন পেমাকে বরখাস্ত করতে চাইছে প্রশাসন।

নবান্নের খবর, দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত এই বিষয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরেও পাঠানো হয়েছে একই প্রস্তাব। কী ভাবে পেমাকে বরখাস্ত করা হবে, রাজ্য সরকার এখন সেই ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে বলে জানান নবান্নের এক কর্তা।

প্রশ্ন উঠেছে, জিটিএ-র স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীকে বরখাস্ত করতে জেলা প্রশাসনকে কেন নবান্ন পর্যন্ত আসতে হচ্ছে? জেলাশাসক প্রাথমিক ভাবে বিনয় তামাং-অনীত থাপার নেতৃত্বে চলা জিটিএ বোর্ডকেই পেমার নিয়োগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন। তাতেও গলদ রয়েছে বলে জেনেছে প্রশাসন। তাই বেআইনি নিয়োগের কারণ দেখিয়ে পেমাকে সরানো যেতেই পারে বলে মনে করেছেন প্রশাসন।

তামাংয়েরা অবশ্য জেলাশাসকের প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তাঁদের যুক্তি, জিটিএ চুক্তির পরে পাহাড়ের ‘শিক্ষা’র দায়িত্ব জিটিএ প্রশাসনের হাতেই দেওয়া হয়েছিল। ফলে এখন জিটিএ পরিচালিত স্কুলগুলির নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের কিছু করার নেই। আর পেমা অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই যুক্তি দেখিয়ে পলাতক গুরুংয়ের বান্ধবীকে বরখাস্ত করতে চান না তামাংয়েরা।

জেলা প্রশাসন অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। জেলাশাসক রাজ্য সরকারকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, জিটিএ-র স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রাম্ত কোনও বিধি‌ই তৈরি হয়নি। বিধি না-থাকলে জিটিএ-র নিয়োগ কতটা আইনসঙ্গত, তা খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে স্বাস্থ্য দফতরে কর্মরত রোশন গিরির বোন বিদ্যাকে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে বদলি করেছিল রাজ্য সরকার। বিদ্যাই পাহাড়ে গত বছরের গোলমালে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছিল। সেই সময় থেকেই বিদ্যা আর অফিসমুখো হননি। একই ভাবে স্কুলে যেতেন না গুরুং-বান্ধবী পেমাও। এ বার তাঁকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Bimal Gurung Pema Lama বিমল গুরুঙ্গ পেমা লামা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy