Advertisement
E-Paper

কর্মী-বিক্ষোভে ফের ফিরতে হল ধনখড়কে

প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে, যাদবপুরের সমাবর্তনে যোগ না-দিয়েই ফিরে যেতে হল তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৮
যাদবপুরে বিক্ষোভের মুখে রাজ্যপাল। মঙ্গলবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

যাদবপুরে বিক্ষোভের মুখে রাজ্যপাল। মঙ্গলবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

কোর্ট-বৈঠকে যোগ দিতে না-পারলেও রাজ্যপাল-আচার্য জগদীপ ধনখড় সোমবার অন্তত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে গিয়ে অরবিন্দ ভবনে ঢুকতে পেরেছিলেন। মঙ্গলবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক পেরোতে পারলেও কোনও ভবনে ঢোকা হল না তাঁর। প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে, যাদবপুরের সমাবর্তনে যোগ না-দিয়েই ফিরে যেতে হল তাঁকে। সমাবর্তন অনুষ্ঠান হল আচার্য ছাড়াই।

রাজ্যপাল সোমবার যাদবপুরে কোর্ট-বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে প্রবল ছাত্র-বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। তার পরেও আচার্য জানিয়ে দেন, মঙ্গলবার সমাবর্তনে তিনি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ধনখড়ের গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ নম্বর গেট দিয়ে ঢোকে। কিন্তু কিছুটা এগোতেই ছাত্রছাত্রীরা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যেরা কালো পতাকা নিয়ে তাঁর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি দিতে থাকেন তাঁরা। বলতে থাকেন, রাজ্যপালের গাড়ি যেতে হলে তাঁদের দেহের উপর দিয়ে যেতে হবে। রাজ্যপাল গাড়িতেই বসে থাকেন।

গাড়িতে বসে বসেই এই ঘটনা নিয়ে টুইট করতে থাকেন ধনখড়। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ইতিমধ্যে দুই সহ-উপাচার্যকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। কিন্তু শিক্ষাকর্মীরা তাঁকে রাজ্যপালের কাছে যেতে বাধা দেন। উপাচার্য সেই সময় রাজ্যপালকে ফোন করে জানান, তাঁকেও আটকে দেওয়া হয়েছে। উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাকে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। আমি এগোতে পারছি না।’’ তিনি ফোনে আরও জানান, আচার্য না-থাকলে উপাচার্য সমাবর্তন চালাতে পারেন। এর পরে উপাচার্যকে ফোনে বলতে শোনা যায়, ‘‘তা হলে যাদবপুর কী করে এত উৎকর্ষের জায়গায় পৌঁছচ্ছে? এত পুরস্কার পাচ্ছে?’’ পরে জানা যায়, রাজ্যপাল ফোনে উপাচার্যকে বলেছিলেন, এমন ঘটনা ঘটলে আপনি আছেন কেন? আপনারাই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংস করছেন। তার পরেই উপাচার্য যাদবপুরের উৎকর্ষের প্রসঙ্গ তোলেন।

আরও পড়ুন:‘আইন’ ছিঁড়ে প্রতিবাদের সমাবর্তন যাদবপুরে

এর পরে উপাচার্য ফিরে যান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট-সদস্যদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। কোর্টের সদস্যেরা এ বার গাড়িতে বসে থাকা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু শিক্ষাবন্ধু সমিতি সেখানেও তাঁদের বাধা দেয়। সমিতির নেতা বিনয় সিংহ বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে কোনও পরিস্থিতিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কোর্ট-সদস্যদেরও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে দেব না।’’ কোর্টের সদস্যেরা এর পরে সমাবর্তনস্থলে ফিরে যান।

রাজ্যপাল তখনও ঠায় গাড়িতে বসে। কিছু পরে গাড়ির উপরের ‘সান রুফ’ খুলে তিনি মাথা বার করে কিছু বলতে চান। কিন্তু গাড়ি ঘিরে শিক্ষাবন্ধু সমিতির প্রবল বিক্ষোভ চলায় তিনি কিছুই বলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত গাড়ি থেকে নেমে পড়ে তিনি জানান, এ ভাবে বিক্ষোভের মুখে আটকে থাকা তাঁর কাছে খুবই
যন্ত্রণাদায়ক। পুরো ঘটনার জন্য তিনি উপাচার্যকে, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘‘কিছু লোক আটকাচ্ছে। কিন্তু এমন ঘটনায় ছাত্রদেরই
ভোগান্তি হচ্ছে।’’ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে রাজ্যপালের পরের পর মন্তব্যের জেরে অনেক পড়ুয়াই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ দিন রাজ্যপাল সমাবর্তনের মঞ্চে থাকলে তাঁরা তাঁর হাত থেকে ডিগ্রি নেবেন না।

প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে রাজ্যপালের গাড়ি ঘুরিয়ে নেওয়া হয়। রাজ্যপাল ছাড়াই শুরু হয় সমাবর্তন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা দেবরাজ দেবনাথ বলেন, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রাজ্যপাল যে-ভূমিকা নিয়েছেন, তার জন্যই আমরা চেয়েছিলাম, তিনি যেন সমাবর্তনে না-আসেন। কোনও পরিস্থিতিতেই তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসুন, আমরা তা চাই না।’’

Jagdeep Dhankhar Jadavpur University Convocation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy