Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Governor

মন্তব্য এড়ালেন রাজ্যপাল, হল না ‘গার্ড অফ অনার’ও

লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষে নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাং-এর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এ দিন মহম্মদবাজার ব্লকের বেলগড়িয়া গ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল।

নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাং-কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ছবি পিটিআই

নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাং-কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘নিজেকে সামলান।’’ তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা পরে বীরভূম জেলায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দিলেন না রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বরং বললেন, ‘‘বীরভূমে কত মহান ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ এখানে শান্তিনিকেতন স্থাপনা করেছিলেন। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন এখানকার। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানকার। এই সেই জায়গা, যেখানে গীতগোবিন্দ লেখা হয়েছিল।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেও রাজ্যপাল ধনখড়ের এ ভাবে প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে যাওয়া খানিকটা ব্যতিক্রমী ঘটনা।

রাজ্যপাল যেমন মুখ্যমন্ত্রীর কথার পাল্টা কিছু বলতে চাননি, অন্য দিকে আবার এ দিন তাঁর কর্মসূচিতে মহকুমাশাসক ছাড়া প্রশাসনের তরফে কাউকে দেখা যায়নি। যদিও তা নিয়েও মুখ খোলেননি রাজ্যপাল।

লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষে নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাং-এর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এ দিন মহম্মদবাজার ব্লকের বেলগড়িয়া গ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন না বীরভূমের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। ছিলেন মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর) ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (বোলপুর)। রাজভবন সূত্রে বলা হয়েছে, প্রোটোকল অনুযায়ী রাজ্যপালকে জেলায় ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার কথা। কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ দিন তা দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হয়নি, তা জানতে চাইলে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য নয়।’’

রাজ্যপালের যে সফরসূচি জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছিল, তাতে আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত ছিলেন না স্থানীয় ভূতুড়া পঞ্চায়েতের প্রধান। নিহত জওয়ানের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলার পরে ঘোষিত সূচি অনুযায়ী পঞ্চায়েত প্রধানের হাতে এক হাজারটি মাস্কের বাক্স তুলে দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যপালের। স্থানীয় প্রধান দিদিমণি মারান্ডির খোঁজ পড়তেই দেখা যায় তিনি অনুপস্থিত। এর পরে ডাক পড়ে বিডিও-র। রাজ্যপালের হাত থেকে মাস্ক নেন মহম্মদবাজারের বিডিও অশিস মণ্ডল।

কেন তিনি অনুপস্থিত, সে ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, ‘‘আমাকে কেউ আমন্ত্রণ জানাননি, তাই যাইনি।’’ তবে জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্যপালের কোনও অনুষ্ঠানে যেতে বারণ রয়েছে। তবে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেছেন, ‘‘প্রধানের হয়তো কোনও ব্যক্তিগত কাজ ছিল।’’

বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য রাজ্যপালের ‘অসম্মান’ নিয়ে ফের সরব হয়েছেন। পুরুলিয়ায় একটি কর্মসূচিতে গিয়ে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী দ্বৈরথ প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে গ্রেফতার করতে বা দড়ি বেঁধে থানায় নিয়ে যেতে পারবেন না। পারলে সেটাই তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) করতেন। তাই ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে অসম্মান করা হচ্ছে, কুৎসা রটানো হচ্ছে। আমার মনে হয়, রাজ্যপাল তাঁর এক্তিয়ারে থেকে সাংবিধানিক কাজই করছেন। যাঁরা সংবিধান মানেন না, আইন মানেন না, তাঁদের একটু কষ্ট তো হবেই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Governor Jagdeep Dhankhar Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE