Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মহাজোটের জয়ের হ্যাটট্রিক রামজীবনপুরে

মহাজোটের যে কোনও বিকল্প নেই, ফের তা প্রমাণ করল রামজীবনপুর। গত দুটি পুর নির্বাচনে (২০০৫ এবং ২০১০) ঘুঁটি উল্টে বামেদের পুরনো ঘাঁটি, ঘাটালের ওই পুরসভা দখল করেছিল মহাজোট। যার নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল। অস্ত্র একই রয়েছে। এ বার তাতে শান দিয়েছে বামেরা। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তাদের নেতৃত্বেই মহাজোটে সামিল হয়েছে কংগ্রেস এমনকী বিজেপি-ও।

জয়ের পরে। ঘাটাল কলেজে গণনা কেন্দ্রের সামনে রামজীবনপুরের জোট প্রার্থী-সমর্থকরা। — নিজস্ব চিত্র।

জয়ের পরে। ঘাটাল কলেজে গণনা কেন্দ্রের সামনে রামজীবনপুরের জোট প্রার্থী-সমর্থকরা। — নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৫৬
Share: Save:

মহাজোটের যে কোনও বিকল্প নেই, ফের তা প্রমাণ করল রামজীবনপুর। গত দুটি পুর নির্বাচনে (২০০৫ এবং ২০১০) ঘুঁটি উল্টে বামেদের পুরনো ঘাঁটি, ঘাটালের ওই পুরসভা দখল করেছিল মহাজোট। যার নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল। অস্ত্র একই রয়েছে। এ বার তাতে শান দিয়েছে বামেরা। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তাদের নেতৃত্বেই মহাজোটে সামিল হয়েছে কংগ্রেস এমনকী বিজেপি-ও। ১১ আসনের ওই পুরসভায় জোটের ৪ প্রার্থী জয়ী হলেও দু’টি আসনে বিজেপি-র প্রতীকে জয়ী প্রার্থীরাও ঘোষণা করেছেন, সমর্থন তাঁরা জোট প্রার্থীকেই করবেন। ফলে মহাজোটের ট্র্যাডিশনই বজায় থাকল পশ্চিম মেদিনীপুরের ওই পুরসভায়।

ওই পুরসভায় ৯টিতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস-এবং বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের মহাজোট— ‘দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চ’। প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’। আগেই মনোনয়ন পেশ করেছিল বিজেপি। জোট গড়ার সিদ্ধান্তের পরে তা প্রত্যাহারের সুযোগ ছিল না। তবে মহাজোটে সামিল হয়ে তারা আগেই জানিয়েছিল, জয়ী হলে প্রার্থীরা সমর্থন করবে মহাজোটকেই।

এ দিন গণনা শেষে দেখা গিয়েছে, রামজীবনপুর ১১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৫টি, জোট সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ৪টি আসনে এবং ২টি আসনে জিতেছে বিজেপি। হিসেব মতো এই ফল ত্রিশঙ্কু। কিন্তু জয়ী বিজেপি তাদের পুরনো অবস্থান বজায় রেখে এ দিনও জানিয়ে দিয়েছেন, মহাজোটকে সমর্থন করবেন তাঁরা। অর্থাৎ গত দু’বারের ধারা বজায় রেখে এ বারও পশ্চিম মেদিনীপুরের এই পুরসভায় বোর্ড গড়তে চলেছে শাসক বিরোধী মহাজোট।

গত দশ বছরে জোটের সমীকরণে সাফল্য এসেছে রামজীবনপুরে। ২০০৫ সালে রাজ্যপাটে যখন বামেরা, তখন এখানে পুরভোটে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং‌ বিজেপি মহাজোট গড়ে লড়াই করেছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর ক্ষমতায় থাকা বামেদের হটিয়ে পুরসভা দখলও করেছিল মহাজোট। সে বার জোটের পক্ষে ফল ছিল ৬-৫। ২০১০ সালের পুরভোটে ফের ১০টি আসনেই জয়ী হয়েছিলেন মহাজোট-প্রার্থীরা। মহাজোট বোর্ড দখল করা সত্ত্বেও বিধানসভা নির্বাচনের পরে বোর্ড ভাঙিয়ে একক ভাবেই পুরসভার দখল নেয় তৃণমূল। তৃণমূলের অন্দরের খবর, যা ভাল চোখে দেখেননি রামজীবনপুরের বাসিন্দারা।

এ বার জোট ভাঙতে শাসক দলের চেষ্টার অবশ্য ত্রুটি ছিল না। প্রচারে বার বার ছুটে এসেছিলেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। তা-ও বোর্ড হারাতে হবে, ভাবেননি শাসক দলের নেতারা। এ দিন জোট প্রার্থীদের জয়ের খবর আসা শুরু হতেই গণনাকেন্দ্রে থাকা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বলতে শোনা যায়, ‘‘জোট-অস্ত্র ব্যুমেরাং হবে ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE