Advertisement
E-Paper

আইন কলেজে ভেঙে দাও ছাত্র সংগঠন: পার্থ

দিনের শেষে ‘ক়ড়া’ বার্তা শুনিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। অধ্যক্ষকে এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানাকে বলেছেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৪
তছনছ: ছাত্রদের একাংশের তাণ্ডবের পরে সরানো হচ্ছে ভাঙা নোটিস বোর্ড। শুক্রবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে। ছবি: শৌভিক দে।

তছনছ: ছাত্রদের একাংশের তাণ্ডবের পরে সরানো হচ্ছে ভাঙা নোটিস বোর্ড। শুক্রবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে। ছবি: শৌভিক দে।

নিজের দলের ছাত্র শাখার গোষ্ঠী-কাজিয়ায় রাশ টানা যাচ্ছে না বলে বারবার খেদ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার মধ্যেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আপত্তিকর আচরণ ও হুমকির অভিযোগ তুলে শুক্রবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ভাঙচুর চালালেন এক দল পড়ুয়া।

ওই কলেজের অন্দরের খবর, এ দিনের ভাঙচুরের জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র গোষ্ঠী-কোন্দলই দায়ী। ছাত্র সংসদের প্রাপ্য টাকা কোন গোষ্ঠী পাবে, তা নিয়ে কলেজ-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চাপান-উতোর চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। সব মিলিয়েই এ দিনের ভাঙচুর।

দিনের শেষে ‘ক়ড়া’ বার্তা শুনিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। অধ্যক্ষকে এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানাকে বলেছেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তকে অবিলম্বে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ইউনিট ভেঙে দিতে বলেছেন তিনি। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘টিএমসিপি-র পতাকা নিয়ে ভাঙচুর করা হবে, এটা কিছুতেই মানবো না।’’

গোষ্ঠী-কাজিয়া নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জয়া। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী আমাকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার এই বিষয়ে তাঁকে রিপোর্ট দেব।’’ ভাঙচুরের ঘটনায় টিএমসিপি-র ওই কলেজ শাখার সভাপতি মনোজিৎ মিশ্র-সহ দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কলেজ সূত্রের খবর, নবীন বরণের জন্য দু’লক্ষ ১৬ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ইতিমধ্যেই ছাত্র সংসদকে দেওয়া হয়েছে। ক্রীড়া খাতে দেড় লক্ষ টাকা চেয়েছে সংসদ। কিন্তু সেই সংসদের সাধারণ সম্পাদক কে, তা নিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ তুঙ্গে উঠেছে। এক গোষ্ঠীর দাবি, আপন সাহা নামে চূড়ান্ত বর্ষের এক ছাত্রই সাধারণ সম্পাদক। বিরোধী গোষ্ঠীর দাবি, সাত্যকি দত্ত নতুন সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। কিন্তু আপন-ঘনিষ্ঠ অধ্যক্ষ তাঁদের আমল দিচ্ছেন না।

কী হয়েছিল এ দিন?

ওই কলেজে ক্লাস হয় সকালে। অধ্যক্ষ দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, এ দিন তিনি এক সেমিনারে ব্যস্ত থাকায় কলেজে যাননি। ক্লাস শেষের পরে পড়ুয়াদের একাংশ ভাঙচুর করেন। খবর পেয়েই তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে সব জানান। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘ভাঙচুর যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।’’

বিকেলে কলেজে গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষের ঘরের সামনে নোটিস বোর্ড ও চেয়ার ভাঙা আর ওল্টানো অবস্থায় পড়ে আছে। ভেঙে ফেলা হয়েছে সিসিটিভি-র ক্যামেরাও। পড়ুয়াদের অভিযোগ: অধ্যক্ষ নিয়মিত কলেজে আসেন না। পড়ুয়াদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ঋতম ঘোষের অভিযোগ, আপন সাহা কলেজে নানা ভাবে উপদ্রব করছেন। তার প্রতিবাদ করায় শিক্ষামন্ত্রীর নাম করে অধ্যক্ষ তাঁদের কলেজ-ছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। কলেজের ফি বৃদ্ধি নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। পার্থবাবু জানান, এই বিষয়ে অধ্যক্ষ কিছু বলেননি। তবু ফি জমা দেওয়ার কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে।

শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, শুধু দু’দল ছাত্রের গোলমালে তো এমন ঘটনা ঘটতে পারে না। এর পিছনে টিএমসিপি-র মাঝারি ও বড় মাপের নেতাদের কি কোনও ভূমিকা নেই?

মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ভাঙচুরের পিছনে যারা রয়েছে, তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।’’ দলীয় সূত্রের খবর, ওই কলেজে সব থেকে বেশি প্রভাব টিএমসিপি-র দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি সঞ্জয় দে-র। কিন্তু তাঁর দাবি, ‘‘এ-সব গোলমালের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’’

ওই কলেজে তাঁদের সংগঠনে গোষ্ঠী-কোন্দলের প্রসঙ্গ তুলে জানতে চাওয়া হয়, ওখানে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কে? সরাসরি জবাব এড়িয়ে সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘সাত্যকি যে-ভাবে সাধারণ সম্পাদক হতে চাইছেন, তা নিয়মবিরুদ্ধ।’’

South Calcutta Law College Students Vandalized Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy