ওড়িশায় ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করা হয় পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের। সেই বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজার ডট কমে। এ বার এই ঘটনায় ওড়িশার বিজেপি সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে হেবিয়াস কর্পাস দাখিল করল দুই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।
গত ২৫ জুন ওড়িশায় পশ্চিমবঙ্গের ১৬ জন শ্রমিককে আটক করে সে রাজ্যের পুলিশ। তাঁরা সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে তাঁদের আটক করা হয়। ওই শ্রমিকেরা পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা। প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ ওই শ্রমিকদের আত্মীয়পরিজন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তাঁরা উদ্বিগ্ন। এখনও ধৃতদের ছাড়া হয়নি। নলহাটির ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নজরে আসে। তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার ওড়িশার মুখ্যসচিব মনোজ আহুজাকে চিঠি পাঠিয়ে ওই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পন্থ। চিঠিতে পন্থ লিখেছেন, শুধুমাত্র নিজেদের মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার জন্য যে ভাবে তাঁদের অন্যায় ভাবে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা শুধু অন্যায় এবং বৈষম্যমূলকই নয়, মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকারেরও পরিপন্থী। ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় কাজে যাওয়া রাজ্যের শ্রমিকেরা ক্রমাগত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে সে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানিয়েছেন পন্থ। চিঠিতে বাংলার মুখ্যসচিব লিখেছেন, হয়রানির শিকার হওয়া ওই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ দিনমজুর, কেউ রিকশাচালক, কেউ আবার পরিচারকের কাজ করেন। কেউ কেউ আবার দীর্ঘদিন ধরে ওড়িশায় বাস করছেন। ওড়িশার কোথায় কোথায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, তা-ও ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন পন্থ।
আরও পড়ুন:
এর পরে শুক্রবার হাই কোর্টে হেবিয়াস কর্পাস করল দুই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার। তারা আবেদনে জানিয়েছে, ওই শ্রমিকদের হেফাজতে নেওয়ার কোনও নথি (মেমো) দাখিল করা হয়নি। তাঁদের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও হাজির করানো হয়নি, যা আইন লঙ্ঘনের শামিল। পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকেরা যে সাহায্য চাইবেন, আমরা তা দিতে প্রস্তুত। ওঁদের পরিবার আইনি সাহায্য চেয়েছিল, দিয়েছি। ওঁদের লড়াইয়ে পাশে রয়েছি।’’ সংগঠন সূত্রে খবর, আরও কয়েকটি বিষয়ে আগামী দিনে হাই কোর্টে মামলা করতে পারে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার।