Advertisement
০৩ মে ২০২৪

হরকায় বিষাদ

জটিল কোনও সংখ্যাতত্ত্ব নয়। পাটিগণিতের সহজ হিসেব। এখন এটাই সবথেকে বেশি চর্চার বিষয় জন আন্দোলন পার্টি (জাপ) আর তৃণমূলের অফিসে। ‘‘দেখুন দেখুন, দুটো ওয়ার্ড আমরা দুই ভোটের ব্যবধানে হেরেছি! পাঁচ ভোটের জন্য হেরেছি একটা ওয়ার্ডে,’’

সৌমিত্র কুণ্ডু
কালিম্পং শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ০২:৩১
Share: Save:

জটিল কোনও সংখ্যাতত্ত্ব নয়। পাটিগণিতের সহজ হিসেব। এখন এটাই সবথেকে বেশি চর্চার বিষয় জন আন্দোলন পার্টি (জাপ) আর তৃণমূলের অফিসে। ‘‘দেখুন দেখুন, দুটো ওয়ার্ড আমরা দুই ভোটের ব্যবধানে হেরেছি! পাঁচ ভোটের জন্য হেরেছি একটা ওয়ার্ডে,’’ বলছিলেন এক জাপ কর্মী। এই সব ওয়ার্ডে তৃণমূলের ভোট যোগ করলে অনেক পিছনে পড়ে যায় মোর্চা।

এমন উদাহরণ হাতের কাছে ভুরি ভুরি। পরিসংখ্যানেও দেখা যাচ্ছে, মোর্চা যেখানে ৪৫.৫৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে, সেখানে তৃণমূল ও হরকা বাহাদুরের দল মিলে দাঁড়ায় প্রায় ৪৭ শতাংশে। প্রাপ্ত ভোটের হিসেব বলছে, দু’দল আলাদা পেয়েছে দু’টি করে আসন। আর জোটবদ্ধ হয়ে লড়লে আরও দশটি আসন বেশি পেত। অর্থাৎ, ২৩ আসনের পুরসভায় ক্ষমতা দখলের খুব কাছে এসে যেত তারা। কিন্তু বিধানসভায় যে জোট একসঙ্গে লড়ছিল, পুরভোটে তারা যুদ্ধে নেমেছে আলাদা ভাবে। আর বিরোধী ভোট ভাগের সেই লাভ ঘরে তুলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।

এ দিন গণনাকেন্দ্র থেকে যখন একে একে মোর্চার জয়ের খবর আসতে শুরু করে, শুরু হয়ে যায় স্লোগান— ‘গোর্খাল্যান্ড জিন্দাবাদ’, ‘মমতা মুর্দাবাদ’, ‘গো ব্যাক হরকা’! শুরু হয় ছোট ছোট মিছিল। পটকার শব্দে কেঁপে উঠতে থাকে রাস্তাঘাট। এক দল সমর্থকের দিকে ছুটে যান আর এক দল সমর্থক। এরই ফাঁকে মোর্চার কালিম্পং জেলা সভাপতি রামবাহাদুর ভুজেল বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাননি। আলাদা রাজ্যের পক্ষে তাঁরা ভোট দিয়েছেন।’’

সত্যিই কি তাই? তৃণমূলও ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছে, জোট না হওয়ায় ফসল তুলেছে মোর্চা। যদিও মুখে তাঁরা অন্য যুক্তি দিচ্ছেন। তৃণমূলে কালিম্পঙের দায়িত্বে থাকা মোহন শর্মা বলেন, ‘‘আমরা খাতা খুলতে পেরেছি। গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভোট হয়েছে। এটাই প্রাপ্তি। জাপ একলা চলে জেনে বুঝে মোর্চাকে সুবিধা করে দিয়েছে।’’

আর হরকা? জাপের প্রধান এ দিন গণনা শুরুর আগে দলীয় কার্যালয়ে চলে এসেছিলেন। তবে ভোটের ফল তাদের প্রত্যাশার ধারে কাছে নেই দেখে একসময়ে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। সারা দিন ফোনও ধরতে চাননি। বেলা দশটার পর থেকেই জাপের কার্যালয় ফাঁকা হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE