ফাইল চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গরমিল ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে কমবেশি আট বছর আগে কিছু প্রার্থীর দায়ের করা মামলা বুধবার খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এতে স্কুলশিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলায় এসএসসি তথা রাজ্য সরকারের জয় হল, তেমনই নিয়োগপত্র পাওয়া প্রার্থীদের চাকরির অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতারও সুরাহা হয়ে গেল। মামলাকারীদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছেন।
প্রার্থীদের মামলা খারিজ করে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এ দিন জানিয়ে দেন, এসএসসি-র তৈরি ‘কম্বাইন্ড মেরিট লিস্ট’ শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত প্যানেল নয়। এসএসসি সূত্রের খবর, ২০১১ সালে ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১২ সালের ২৯ জুলাই। ওই বছরেরই ১ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষার ফল বেরোয়। ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে ৩৬,১৪৬ জনের নাম-সহ ‘কম্বাইন্ড মেরিট লিস্ট’ বা সম্মিলিত মেধা-তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। পরে বেরোয় চূড়ান্ত মেধা-তালিকা। তার পরেই সম্মিলিত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের একাংশ হাইকোর্টে মামলা করে জানান, কম্বাইন্ড লিস্টের উপরের দিকে থাকা অনেক প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত প্যানেলে নেই। অথচ কম্বাইন্ড লিস্টের নীচের দিকে থাকা অনেক প্রার্থী চূড়ান্ত প্যানেলে ঠাঁই পেয়েছেন। এই ‘অস্বচ্ছতা’র বিচার চান তাঁরা।
এসএসসি জানায়, কম্বাইন্ড মেরিট লিস্ট মানে চূড়ান্ত প্যানেল নয়। সম্মিলিত তালিকার নীচের দিকে থাকা অনেক প্রার্থীর বিভিন্ন পরীক্ষার নম্বর থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি বিষয় বিচার-বিবেচনা করে দেখা গিয়েছে, তাঁরা চূড়ান্ত প্যানেলে থাকার যোগ্য।
আদালতের রায়ে স্বভাবতই খুশি এসএসসি-কর্তারা। সংস্থার এক কর্তা বলেন, “এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। সেই সময় মামলা হলেও স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ থেমে থাকেনি। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বছর কয়েক আগে শেষও হয়ে গিয়েছে। নিয়োগপত্র পাওয়া প্রার্থীরা এখন বিভিন্ন স্কুলে কাজ করছেন।”
এসএসসি-র খবর, মামলার জেরে নিয়োগের উপরে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল উচ্চ আদালত। পরে তা তুলে নেওয়ায় কয়েকশো প্রার্থী নিয়োগপত্র পান। কিন্তু নিয়োগ নিয়ে মামলা চলতে থাকায় রাজ্যের শিক্ষা দফতর ওই প্রার্থীদের ‘সার্ভিস অ্যাপ্রুভাল’ বা চাকরির অনুমোদন দেয়নি। অনুমোদন দেওয়ার কথা সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শকদেরই।
চাকরির অনুমোদন না-থাকায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নিয়োগপত্র পাওয়া কয়েকশো পরীক্ষার্থী। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি এ দিন জানান, চাকরির অনুমোদন না-থাকায় যাঁরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্কুলে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা বদলি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। তাই নিয়োগপত্র পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাকরির অনুমোদন চেয়ে মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত হন। মূল মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের চাকরির অনুমোদন পেতে আর কোনও অসুবিধা রইল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy