Advertisement
E-Paper

রোগীমৃত্যুর পর টাকার জন্য দেহ আটকে রাখা যাবে না! কতক্ষণের মধ্যে পরিবারকে দেহ দিতে হবে, সময় বেঁধে দিল স্বাস্থ্য কমিশন

স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে সোমবার একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়, হাসপাতালে কোনও রোগীর মৃত্যুর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেহ ছাড়তে হবে। দেহ ছাড়ার সর্বোচ্চ সময়ও উল্লেখ করেছে কমিশন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:২৯
Health Commission directs hospitals to discharge of patient\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s body within five hours of death

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রোগীমৃত্যুর পরে দেহ অনেক সময় আটকে রাখে হাসপাতাল। কখনও হাসপাতালের বিলের টাকা মেটানো হয়নি বলে, তো আবার কখনও স্বাস্থ্যবিমার টাকা না পৌঁছোনোর মতো নানা কারণ দেখানো হয়। তবে এ বার থেকে আর অযথা মৃতদেহ আটকে রাখতে পারবেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সময় বেঁধে দিয়ে নির্দেশিকা জারি করল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন।

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন’ বা স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে সোমবার একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়, হাসপাতালে কোনও রোগীর মৃত্যুর পর পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে দেহ ছাড়তে হবে। অন্যথায়, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবেও জানানো হয় নির্দেশিকায়। শুধু তা-ই নয়, নিয়ম না মানলে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলও হতে পারে বলে জানিয়েছে কমিশন। যদি কোনও কারণে দেহ ছাড়তে দেরি হয়, তবে তা উপযুক্ত পদ্ধতিতে রোগীর পরিবারকে জানাতে হবে। দেহে যাতে পচন না-ধরে সেই বিষয়ও মাথায় রাখতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশিকা জারি করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ অগস্ট একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর পর দেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। মৃতের পরিবারের তরফে অভিযোগ, রোগীমৃত্যুর ১৫ ঘণ্টা পর দেহ ছেড়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি রোগীর আত্মীয়েরা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, গত ১২ অগস্ট রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রোগীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই রোগীর পরিবারকে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ওই রোগীর স্বাস্থ্যবিমা ছিল। ফলে চিকিৎসা সংক্রান্ত বাকি টাকা জমা দেওয়া না পর্যন্ত দেহ ছাড়া সম্ভব নয় বলেই জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের যে বিভাগে এই সংক্রান্ত কাজ হয়, তা পরের দিন সকাল ৮টা আগে খুলবে না। তাই রাতে দেহ বার করতে পারেননি মৃতের বাড়ির লোক।

আরও অভিযোগ, সকালেও দেহ ছাড়েনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নানা কারণে বিল সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। যতক্ষণ না ওই সমস্যা মেটানো হবে, ততক্ষণ দেহ ছাড়া হবে না বলে জানানো হয় মৃতের পরিবারকে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেলেও সমস্যা মেটেনি। পরিবারের দাবি, দুপুরে মৃতের পুত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন দেহ ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এ-ও জানান, তিনি হাসপাতালে থাকছেন, বিল সংক্রান্ত সব সমস্যা মেটার পরই যাবেন। তাঁর বাবার দেহ যদি ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে দুপুরের মধ্যে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সেই সব কথায় কর্ণপাত করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত দুপুর ৩টের পর দেহ ছাড়া হয়।

এই ঘটনার অভিযোগ নিয়ে নড়েচড়ে বসে কমিশন। অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরই দেহ ছাড়ার বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করল তারা। কমিশনের মতে, ওই হাসপাতালে বিল সংক্রান্ত কোনও সমস্যা ছিল। বিমার টাকা ছাড়াও রোগীর পরিবার হাসপাতালকে ৪৬ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। কমিশন জানিয়েছে, কোন রোগী মারা গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেহ ছাড়তে হবে। টাকার জন্য দেহ আটকে রাখা যাবে না।

West Bengal Health Commission Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy