Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্বাস্থ্য সঙ্কটে রাজ্য, কলকাতা-জেলায় সর্বত্র স্তব্ধ হাসপাতাল পরিষেবা

দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ— সর্বত্র প্রায় সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এ দিন চিকিৎসা পরিষেবা ধাক্কা খেয়েছে মারাত্মক ভাবে।

বিক্ষোভরত চিকিৎসকেরা।

বিক্ষোভরত চিকিৎসকেরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ০২:১৫
Share: Save:

বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসক-নিগ্রহের প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তারদের কর্মবিরতি, বিক্ষোভ-অবস্থানের অজস্র উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু একটি হাসপাতালে ডাক্তার-নিগ্রহের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে সব সরকারি হাসপাতালে বহির্বিভাগের পরিষেবা বন্ধ করে প্রতিবাদ প্রদর্শন কার্যত নজিরবিহীন। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সোমবার রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সেই বেনজির পরিস্থিতি তৈরি হল রাজ্যে।

দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ— সর্বত্র প্রায় সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এ দিন চিকিৎসা পরিষেবা ধাক্কা খেয়েছে মারাত্মক ভাবে। কর্মসূচিতে শুধু বহির্বিভাগে পরিষেবা বন্ধের কথা বলা হলেও বিভিন্ন হাসপাতালে ইন্ডোরে, এমনকি জরুরি বিভাগেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। ভর্তি থাকা রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকের খোঁজে দিশাহারা হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে আত্মীয়দের। গুরুতর অসুস্থ বা আহতকে পরিষেবা দেওয়া হয়নি জরুরি বিভাগে। আবার মরণাপন্ন রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে অন্যত্র ছুটতে বাধ্য হয়েছেন সঙ্গীরা।

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে জরুরি বিভাগের পথ আটকে অবস্থানে বসে ছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দুর্ঘটনায় আহত বিষ্ণুপুরের দুই যুবককে নিয়ে জরুরি বিভাগে ঢুকতে গিয়ে বাধা পান পরিজনেরা। পুলিশ নীরব দর্শক। সুপার দেবনারায়ণ সরকার সুরাহার আশ্বাস দিলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইরে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকেন দু’জন।

বর্ধমান মেডিক্যালেও জরুরি বিভাগে ঢোকার মূল দরজা বন্ধ করে দেন ইন্টার্নেরা। দুর্ঘটনায় আহতদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। উল্টে গালাগাল দেওয়া হয়েছে। হাতাহাতি হয়েছে। কাজে যোগ দেননি ইন্টার্নেরা। পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালেও। দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। সেখানে শুধু মেডিসিনের বহির্বিভাগ পরিষেবা চালু ছিল।

কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্ন ও হাউসস্টাফেরা জরুরি বিভাগের সামনে কালো ব্যাজ পরে অবস্থান করেন। বহির্বিভাগ, এমনকি জরুরি বিভাগে আসা প্রায় সব রোগীকে‌ রেফার করে দেওয়া হয় অন্যত্র।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও জরুরি বিভাগের গেট আটকে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মারামারি বেধে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয় পুলিশও। মালদহ মেডিক্যালেও জরুরি পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারেরা জরুরি পরিষেবার ঘরের গেট আটকে অবস্থানে বসেন।

বেলা ১২টার পরে ন্যাশনাল, এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল, আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতিতে শামিল হন। পরিষেবা না-মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীদের আত্মীয়েরা। এসএসকেএমে জরুরি পরিষেবা দীর্ঘ ক্ষণ বন্ধ থাকায় প্রথমে হরিশ মুখার্জি রোড এবং পরে এজেসি বোস রোড ও ক্যাথিড্রাল রোডের মোড় অবরোধ করা হয়।

কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে এ দিন মাত্র এক জন চিকিৎসক ছিলেন। বহির্বিভাগের পরিষেবা বন্ধ ছিল। সেখানে সকাল থেকে প্রচুর রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুপুরে জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখান জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেখান থেকে মিছিল করে তাঁরা এনআরএস হাসপাতালে যান।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health NRS NRS Hospital Junior Doctors Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE