বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পুলিশ অফিসার রত্না সরকার। তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মামলার শুনানি চলছে হাই কোর্টে। শনিবার সেই মামলার শুনানিতেই সিবিআইয়ের দিকে আঙুল তুললেন ধৃত পুলিশ অফিসারের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সওয়াল করে জানালেন, সিবিআইয়ের উদ্দেশ্য শুধুই গ্রেফতার। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিট ফাইল করতে কেন এত সময় লাগল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। অন্য দিকে, বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত প্রশ্ন তুলেছেন, কেন সিবিআই অতিরিক্ত তথ্য দেয়নি। সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
শনিবার হাই কোর্টে মামলার শুনানিতে কল্যাণ সওয়াল করে জানান, সুপ্রিম কোর্ট রোজ ভর্ৎসনা করছে। সিবিআই শুধু গ্রেফতারের জন্য রয়েছে। এর পরেই বিচারপতি সেনগুপ্তের প্রশ্ন, কবে নোটিস করা হয়েছে? কী অতিরিক্ত তথ্য ছিল, তা-ও জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, মামলা গ্রহণের এক মাসের মধ্যে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। যা তথ্য মিলেছে, তা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। এর পরেই বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনারা খুব তাড়াহুড়ো করেছেন। অতিরিক্ত তথ্যগুলি দেননি কেন? পার্টি অফিসে কী হল? আর অভিযুক্তদের নাম এল কি না সেটা উল্লেখ করার কথা।’’
সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমে নিহতের বক্তব্য ছিল। তাঁর দাবি, অভিযুক্ত দীপঙ্কর দেবনাথ (হোম গার্ড) রক্তের দাগ মুছে দেন পুলিশ অফিসার রত্নার নির্দেশে। বিচারপতি জানতে চান, আর কারও বক্তব্য কি রেকর্ড করা হয়েছিল? নিহত অভিজিতের আইনজীবীর সওয়াল, এই মামলায় পুলিশ আধিকারিকদের ভূমিকা আশ্চর্যের। প্রথম চার্জশিট পেশ করার পরে পুনরায় তদন্তের সুযোগ ছিল। কিন্তু তার পর আবার একটি রিট পিটিশন দায়ের হয়। এই মামলার অন্যতম সাক্ষীও রয়েছে। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন গ্রহণযোগ্য কি?’’ নিহতের আইনজীবী সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই প্রসঙ্গে কল্যাণ সওয়াল করে বলেন, ‘‘আমরা ট্রায়ালের পর্যায়ে নেই। রত্না এবং দীপঙ্করের বিরুদ্ধে যে চার্জ রয়েছে, তার বাইরে যেতে পারি না। কোনও প্রমাণ নষ্ট করা হয়নি। সমস্ত প্রমাণ তাদের (সিবিআই) হাতে হয়েছে। চার বছর লেগে গেল তাদের চার্জশিট ফাইল করতে? সিবিআই বলে তারা যা ইচ্ছে করতে পারে না।’’
ভোট-পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মী অভিজিৎ নিহত হন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি ওই মামলায় ইনস্পেক্টর রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। গত ১৮ জুলাই থেকে তাঁরা জেল হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের জামিনের আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম বার প্রকাশিত হওয়ার সময় লেখা হয়েছিল ‘বিশ্বজিৎ সরকার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের জামিন মামলায় হাই কোর্টে প্রশ্নের মুখে সিবিআই’। বস্তুত, ভোট-পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুন হয়েছিলেন। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।)