Advertisement
E-Paper

মমতা-ঘনিষ্ঠের জামিন রদ হবে কি, শুনানি ৪ঠা

জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নিতে চায়। তাই মমতা-ঘনিষ্ঠ সেই ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজার জামিন খারিজের আর্জি জানাল তারা, বৃহস্পতিবার আদালতে যা গৃহীত হয়েছে। পুলিশ সময় মতো তথ্য পেশ করতে না-পারায় ব্যারাকপুরের আদালত গত রবিবার শিবাজিকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যবসায়ীর জামিনের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার বারাসত কোর্টে আর্জি দাখিল করে দিল্লি পুলিশ বলেছে, অভিযুক্তকে তারা নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৮

জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নিতে চায়। তাই মমতা-ঘনিষ্ঠ সেই ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজার জামিন খারিজের আর্জি জানাল তারা, বৃহস্পতিবার আদালতে যা গৃহীত হয়েছে।

পুলিশ সময় মতো তথ্য পেশ করতে না-পারায় ব্যারাকপুরের আদালত গত রবিবার শিবাজিকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যবসায়ীর জামিনের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার বারাসত কোর্টে আর্জি দাখিল করে দিল্লি পুলিশ বলেছে, অভিযুক্তকে তারা নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়। এ দিন আদালতে কর্মবিরতি চলা সত্ত্বেও ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে বিচারক আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। দিল্লি পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, ৪ মার্চ তাঁদের আবেদনের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বারাসত কোর্টের জেলা জজ অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়।

শিবাজি গ্রেফতার হয়েছেন দিল্লির এক জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায়। অভিযোগ, দিল্লির এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকে মোটা ঋণ নিয়ে তিনি ঠিকঠাক শোধ তো করেনইনি, উপরন্তু ঋণ হস্তগত করতে জাল কাগজপত্র জমা করেছেন। গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ঢাকা থেকে ফেরার পরে কলকাতা বিমানবন্দরে শিবাজিকে আটক করে অভিবাসন দফতর। সেই রাতেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। কিন্তু পর দিন তাঁকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলার সময়ে দিল্লি পুলিশের তরফে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তাদের দুই অফিসার রবিবার রাতে যখন কলকাতায় পৌঁছান, তথ্য-প্রমাণের অভাবে ততক্ষণে শিবাজির জামিন হয়ে যায়।

এ দিন সেই জামিনের বিরোধিতা করে জেলার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ (বারাসত) হয়েছিল দিল্লি পুলিশ। আবেদন গৃহীত হওয়ার পরে দিল্লির পুলিশের দুই অফিসার বিকেলের ট্রেনে রাজধানী রওনা হন, তাঁরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত চাইলে উচ্চ আদালতে শুনানির আগে দিল্লি গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আসতে পারেন।

প্রসঙ্গত, শিবাজিকে জামিন দেওয়ার সময়ে আদালত বলেছিল, তাঁকে ১০ মার্চের মধ্যে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে হবে। বুধবারেই দিল্লি পুলিশের অফিসারকে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন শিবাজি। কলকাতায় থাকা দুই অফিসার রাজি হননি। তা হলে কি ৪ তারিখে বারাসত কোর্টে শুনানির আগে শিবাজি দিল্লি যাবেন?

তাঁর কৌঁসুলি রাজদীপ মজুমদার অবশ্য এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। দিল্লি পুলিশের আবেদন প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “আমরা আবেদনের কোনও প্রতিলিপি বা নোটিস এখনও হাতে পাইনি। পেলে সেই মতো ব্যবস্থা হবে।”

মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার এক দিন আগে (১৮ ফেব্রুয়ারি) শিবাজি ঢাকা গিয়েছিলেন। ২১ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফেরেন। বিমানবন্দরে যখন তাঁকে আটক করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী ততক্ষণে বাড়ির দিকে রওনা হয়ে গিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী-সূত্রের খবর: ইমিগ্রেশন কাউন্টারের অফিসার কম্পিউটারে শিবাজির পাসপোর্ট পরীক্ষা করে তাঁর দিকে কয়েক সেকেন্ড চেয়ে থাকেন। শিবাজি খানিকটা বিরক্ত হয়ে বলেন তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে। অফিসার ফের কম্পিউটার দেখে আবার তাকান। এ ভাবে আরও ক’সেকেন্ড যায়। এর পরে ওই ব্যবসায়ীকে একটু অপেক্ষা করতে বলে অফিসার উঠে যান। ফিরে আসেন এক ‘সিনিয়র’-কে সঙ্গে নিয়ে। তিনি পাসপোর্ট দেখে শিবাজিকে বলেন, তাঁকে একটু অভিবাসনের অফিসঘরে যেতে হবে।

অভিবাসন কাউন্টারের লাইনে শিবাজির এক জনের পিছনে ছিলেন রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রীর অন্য সফরসঙ্গীরা বুঝে যান, শিবাজির পাসপোর্ট নিয়ে বড় কোনও সমস্যা হয়েছে। সেটা কী?

বিমানবন্দর সূত্রের খবর: শিবাজির পাসপোর্ট নম্বর কম্পিউটারে দিতেই মনিটরের পর্দায় ভেসে উঠেছিল দিল্লি পুলিশের জারি করা ‘লুক আউট কর্নার’ নোটিস। সেখানে দিল্লি পুলিশের এক অফিসারের নাম ও ফোন নম্বর উল্লেখ করা ছিল। নিয়ম মতো তাঁকে ফোনও করা হয়েছিল। বিমানবন্দরের এক কর্তা জানান, প্রায়শ দেখা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ‘লুক আউট’ নোটিস জারির আগেই জামিন নিয়ে নিয়েছেন, কিংবা অভিযোগ খারিজ হয়ে গিয়েছে। অথচ নোটিসটি থেকে গিয়েছে। তাই এমন অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে বলা হয়।

তবে শিবাজির ক্ষেত্রে তা হয়নি। উল্টে তাঁকে স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান দিল্লি পুলিশের ওই অফিসার।

তাই সেই রাতেই শিবাজিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিমানবন্দর থানায়। দিল্লি পুলিশের দাবি, শিবাজিকে গ্রেফতারের খবর রবিবার সকালে তাঁদের জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। রবিবার রাতের বিমানে দিল্লি পুলিশের দুই অফিসার সন্তোষ ঝা ও হাবিব খান কলকাতায় আসেন।

mamata bandyopadhyay shibaji panja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy