Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
জট এক সদস্যকে নিয়ে

স্বাস্থ্য কমিশন চালাতে পথ দেখাল কোর্ট

কুণালবাবুর আইনজীবী ইন্দ্রনীল রায় আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল ভিডিও-সম্মেলনের মাধ্যমে মামলার শুনানিতে যোগ দিতে চেয়ে আবেদন করেছেন। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

মোট সদস্য ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে বিশেষ এক চিকিৎসক-সদস্যের নিয়োগ নিয়ে মামলা হওয়ায় স্বাস্থ্য কমিশনের কাজ বন্ধ রাখা উচিত নয় বলে মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট।

শুক্রবার একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কমিশনের ১৩ সদস্যের মধ্যে পৃথক মামলা তো হয়েছে মাত্র এক জনের নিয়োগ নিয়ে। অন্য সদস্যদের নিয়ে তো হয়নি। সে-ক্ষেত্রে তাঁদের কাজ করতে বাধা কোথায়?’’ জনস্বার্থের মামলা হয়েছে প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়কে স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্য করায়। সেই মামলার শুনানিতে এ দিন এই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মাত্রে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) এ দিনই বিচারপতি মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চে জানান, বিধি তৈরি না-হওয়ায় স্বাস্থ্য কমিশনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাজ্য ২৪ অগস্ট কমিশনের বিধি তৈরি করে ফেলেছে। কমিশনের কাজ শুরু করতে আর বাধা নেই। এর আগের শুনানিতে অভিযোগ উঠেছিল, বিধি তৈরি না-হওয়া সত্ত্বেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য কমিশন। দিন পনেরো আগে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, কবে বিধি তৈরি হবে, তা আদালতে জানাতে হোক। এজি কিশোর দত্ত তখন আদালতে জানান, বিধি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। যত দিন না বিধি তৈরি হচ্ছে এবং তার গেজেট বিজ্ঞপ্তি হচ্ছে, তত দিন কমিশনের কাজ বন্ধ থাকবে। বিচারপতি মাত্রে এ দিন মামলার আবেদনকারী তথা আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্তের উদ্দেশে বলেন, ‘‘বিধি তৈরি হয়েছে। আর আপত্তি থাকার কথা নয়।’’ ওই আইনজীবী তখন জানান, কমিশনের সদস্য, প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের নিয়োগে স্বচ্ছতা নেই বলেও আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে। কুণাল সাহা নামে প্রবাসী এক চিকিৎসকও সুকুমারবাবুর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে পৃথক মামলা দায়ের করেছেন।

কুণালবাবুর আইনজীবী ইন্দ্রনীল রায় আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল ভিডিও-সম্মেলনের মাধ্যমে মামলার শুনানিতে যোগ দিতে চেয়ে আবেদন করেছেন। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ এর পরে চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবীর কাছে জানতে চায়, মামলা নিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন কি না। সুকুমারবাবুর আইনজীবী জানান, হলফনামা দেওয়া হয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২ নভেম্বর।

সুপ্রিম কোর্টের অন্য একটি মামলার পর্পিরেক্ষিতে সুকুমারবাবুকে দু’বছর আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের মুখ্য উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই মর্মে শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার সুকুমারবাবুকে মুখ্য উপদেষ্টা করায় ২০১২ সালে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে মুখ্যমন্ত্রীকে সেই মামলায় যুক্ত করেছিলেন কুণালবাবু।

মামলার আবেদনে কুণালবাবু জানান, সুকুমারবাবুর চিকিৎসার ত্রুটিতে তাঁর (কুণালবাবুর) স্ত্রী মারা গিয়েছেন এবং সর্বোচ্চ আদালতেও ওই প্রবীণ চিকিৎসক দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাই সুকুমারবাবু রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের মুখ্য উপদেষ্টার পদে থাকতে পারেন না। হাইকোর্ট কুণালবাবুকে নির্দেশ দেয়, মুখ্যমন্ত্রীকে মামলায় যুক্ত করা চলবে না। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০১২ সালেই শীর্ষ আদালতে মামলা করেন কুণালবাবু। ওই বছরের ১৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট কুণালবাবুকে নির্দেশ দিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মামলার নোটিস পাঠাতে। নোটিস পাওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পরে, গত ২৫ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী হলফনামা পেশ করে তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE