Advertisement
E-Paper

কাজের দিনে মিটিং-মিছিল উচিত নয়, বলল হাইকোর্ট

কাজের দিনে শহরের রাস্তায় মিটিং-মিছিল অভিপ্রেত নয় বলে ফের মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। এর আগেও হাইকোর্ট বারংবার এ কথা বলেছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতারা কার্যত এই নির্দেশ মানেননি। বরং অনেক সময়েই এ নিয়ে অনেক বিচারপতিকে নানা রকম মন্তব্য হজম করতে হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৭
মিছিলের জেরে যানজটে আটকে মিনিবাস। সোমবার, ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

মিছিলের জেরে যানজটে আটকে মিনিবাস। সোমবার, ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

কাজের দিনে শহরের রাস্তায় মিটিং-মিছিল অভিপ্রেত নয় বলে ফের মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট।

এর আগেও হাইকোর্ট বারংবার এ কথা বলেছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতারা কার্যত এই নির্দেশ মানেননি। বরং অনেক সময়েই এ নিয়ে অনেক বিচারপতিকে নানা রকম মন্তব্য হজম করতে হয়েছে। যেমন ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিচারপতি অমিতাভ লালা একই নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই এক সাংবাদিক সম্মেলনে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন, ‘‘এখন যদি কোনও কমরেড মিছিল থেকে স্লোগান তোলে ‘লালা বাংলা ছেড়ে পালা’, তবে আমি কী করে তাকে বাধা দেব।’’ এর পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের অবমাননার মামলাও হয়।

পরিস্থিতি কিন্তু বদলায়নি। বিভিন্ন সময়ে বারবার কাজের দিনেই মিটিং-মিছিল করে শহরে যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষমতার প্রদর্শন চলেছে। সোমবার জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর বলেন, ‘‘কাজের দিনে রাস্তায় মিটিং-মিছিল হওয়াটা অনভিপ্রেত। সব রাজনৈতিক দলগুলিকেই এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে।’’

ঘটনাচক্রে প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ দিন পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মিছিল নিয়ে লালবাজার অভিযান করে সিপিএম। বিকেল সাড়ে চারটেয় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয় ওই মিছিল। এর পরে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে পুলিশ মিছিল আটকে দিলে বিকেল পাঁচটা থেকে সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত সেখানেই জমায়েত করেন বাম সমর্থকেরা। এর জেরে যানজটে আটকে যায় এস্‌প্ল্যানেড-সহ শহরের কেন্দ্রস্থল এবং উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা। এই অবস্থা চলে রাত পর্যন্ত। এ ছাড়াও শহরে এ দিন আরও কয়েকটি মিছিল ছিল।

কাজের দিনে শহরে মিটিং-মিছিল বন্ধের দাবি তুলে জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের হয় গত ৬ এপ্রিল। কলকাতা পুরভোটের জন্য দক্ষিণ কলকাতা থেকে গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার-মিছিলের আয়োজন করা হয় ৮ এপ্রিল। ওই মিছিলও যাতে না হয়, মামলার আবেদনে সেই দাবি করা হয়। মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, মিটিং-মিছিল বন্ধ করতে কলকাতা হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। জনস্বার্থে মামলা দায়ের হলেও ঘোষিত কর্মসূচি মতো ৮ এপ্রিল মিছিল করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সে দিনও দুর্ভোগে পড়েন শহরবাসী।

বস্তুত নাগরিকদের অনেকেরই অভিযোগ, কাজের দিনে শহরের ব্যস্ত রাস্তা জুড়ে মিটিং বা মিছিল হলে তাঁদের ভোগান্তি বেড়ে যায়। অসুবিধায় পড়েন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া এবং অফিসযাত্রীরা।

এ নিয়ে নানা সময়ে সংবাদমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিশিষ্টজনেদের একাংশও কাজের দিনে মিটিং-মিছিলের পক্ষপাতী নন। এমনকী, অধিকাংশ নাগরিক এবং শহরে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষেরাও এর ঘোরতর বিরোধী। কিন্তু তা সত্ত্বেও মিটিং-মিছিল বন্ধ হয়নি।

৬ এপ্রিল জনস্বার্থে ওই মামলা দায়ের হলেও তার শুনানি সেই সময়ে হয়নি। সোমবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। কিন্তু সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর দলের প্রচার-মিছিল আগেই হয়ে যাওয়ায় মামলাটির আর কোনও রকম গুরুত্ব নেই। এর পরেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, কাজের দিনে মিটিং-মিছিল হওয়াটা অনভিপ্রেত। তিনি মামলাকারীর আইনজীবীকে জানান, মামলার আর গুরুত্ব না থাকলেও সেটি প্রত্যাহার করে নিয়ে নতুন করে এই বিষয়ে আদালতে আবেদন জানানো যেতে পারে।

kolkata high court meeting rally trinamool tmc cpm bjp congress Mamata Bandopadhyay Biman Bose abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy