Advertisement
E-Paper

মূর্তিস্থলে ‘শুদ্ধকরণ’ তৃণমূলের

তৃণমূলের তরফেও এ দিন টুইটারে বীরসা মুন্ডার ছবি ভুল মূর্তির পায়ের কাছে রাখা হয়েছে দাবি করে অমিত শাহকে বেঁধা হয়েছে। দলের সাংসদ শুখেন্দুশেখর রায়-ও এ দিন কলকাতায় ওই ঘটনা টেনে বিজেপির সমালোচনা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩৫
সাফ-সুতরো: আদিবাসীদের সঙ্গে শ্যামল সাঁতরা। নিজস্ব চিত্র।

সাফ-সুতরো: আদিবাসীদের সঙ্গে শ্যামল সাঁতরা। নিজস্ব চিত্র।

বীরসা-বিভ্রাটের জল গড়াচ্ছে বাঁকুড়ায়। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার পোয়াবাগানে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একটি আদিবাসী পুরুষ মূর্তিকে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে, তার নীচে রাখা আদিবাসী নেতা বীরসা মুন্ডার ছবিতে মালা দেন। শুক্রবার আদিবাসী পুরুষ মূর্তিটির পাদদেশ জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে দুধ-গঙ্গাজল ঢেলে ‘শুদ্ধ’ করা হয়। রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার দাবি, ‘‘সাম্প্রদায়িক দলের নেতা অমিত শাহ ওই আদিবাসী মূর্তির নীচে যাওয়ায়, জায়গাটি অপবিত্র হয়েছে। তাই দুধ-গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করা হল।’’

বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের বক্তব্য, ‘‘সারা দেশে ভগবান বীরসা মুন্ডার বারো রকমের মূর্তি রয়েছে। পোয়াবাগানের ওই মূর্তি বীরসা মুন্ডার। স্থানীয় আদিবাসীদের একাংশ ওই মূর্তির নীচে তাঁর জন্মদিন পালন করেন। রাজনৈতিক স্বার্থে ওই মূর্তিটিকে অস্বীকার করে তৃণমূল আদিবাসীদের অসম্মান করছে।’’

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের পাল্টা দাবি, “আদিবাসী সমাজের সমর্থন সরে যাওয়ায় তৃণমূলের নেতারা এখন জাতপাত নিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন। মূর্তিটি যদি বীরসা মুন্ডার না হয়, তা হলে সেটি শুদ্ধকরণের দরকার পড়ল কেন?’’ তবে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দিলীপ আগরওয়াল বলেন, “এই কর্মসূচি একান্তই আদিবাসী মানুষজনের। আমরা কেবল উপস্থিত ছিলাম।’’

বিজেপির ঘোষিত শাহের কর্মসূচিতে ‘বীরসা মুণ্ডার মূর্তিতে মাল্যদান’-এর কথার উল্লেখ ছিল। তবে বৃহস্পতিবার সকালে আদিবাসী সমাজের একাংশ মূর্তিটি বীরসা মুন্ডার নয় বলে বিজেপি নেতৃত্বকে জানান। তার পরেই জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে বীরসা মুন্ডার একটি ছবি মূর্তির নীচে রাখা হয়। আদিবাসী পুরুষের মূর্তির গলায় অবশ্য আগের দিন থেকেই মালা ছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

এ দিন সকালে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বেশ কিছু আদিবাসী মানুষজন জড়ো হন। মন্ত্রী শ্যামলবাবু ছাড়া, ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, রাইপুরের তৃণমূল বিধায়ক বীরেন্দ্রনাথ টুডু প্রমুখ। মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “বীরসা মুন্ডা আমাদের কাছে ভগবানের মতো। এখানে আদিবাসী পুরুষের একটি প্রতীকী মূর্তি রয়েছে। সেটিকে বিজেপি নেতৃত্ব বীরসা মুন্ডা ভাবায় আমাদের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘অমিত শাহদের আমলে সারা দেশ জুড়ে আদিবাসীরা অত্যাচারিত হচ্ছেন। উনি এখানে আসায় জায়গাটি অপবিত্র হয়েছে। তাই শুদ্ধকরণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।’’

তৃণমূলের তরফেও এ দিন টুইটারে বীরসা মুন্ডার ছবি ভুল মূর্তির পায়ের কাছে রাখা হয়েছে দাবি করে অমিত শাহকে বেঁধা হয়েছে। দলের সাংসদ শুখেন্দুশেখর রায়-ও এ দিন কলকাতায় ওই ঘটনা টেনে বিজেপির সমালোচনা করেন।

যদিও বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি, “বছর পাঁচেক আগে ওই মূর্তিটি বীরসা মুন্ডার বলে বাঁকুড়া জেলা পরিষদ তৈরি করেছিল।’’

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের তৎকালীন সভাধিপতি তথা বর্তমানে মেন্টর অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘ওই মূর্তি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ গড়েছে।’’ ৬০-এ জাতীয় সড়কের পুরুলিয়া চার নম্বর ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবাজি মাইতি বলেন, “রেকর্ড খতিয়ে না দেখে মূর্তিটি নিয়ে কিছু বলতে পারব না।”

Statue BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy