Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হোয়াটসঅ্যাপে তথ্য, দ্রুত ঘরে ফিরলেন বধূ

জেলা পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সহায়তায় শেষ পর্যন্ত ঘরে ফিরলেন কাশীপুরের বধূ। উদ্ধার হওয়ার পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই নিখোঁজ ওই বধূকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। পুরুলিয়ার সাঁওতালডিহি থানার ঘটনা। চারপাশে ক্রমশই যখন সাইবার ক্রাইম বেড়ে চলেছে, খবরের শিরোনামে উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারে একের পর এক অপরাধ, সে সময় স্মার্ট ফোনে অ্যাপসের ব্যবহার করে যেন পথ দেখাল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
সাঁওতালডিহি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৯
Share: Save:

জেলা পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সহায়তায় শেষ পর্যন্ত ঘরে ফিরলেন কাশীপুরের বধূ। উদ্ধার হওয়ার পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই নিখোঁজ ওই বধূকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। পুরুলিয়ার সাঁওতালডিহি থানার ঘটনা।
চারপাশে ক্রমশই যখন সাইবার ক্রাইম বেড়ে চলেছে, খবরের শিরোনামে উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারে একের পর এক অপরাধ, সে সময় স্মার্ট ফোনে অ্যাপসের ব্যবহার করে যেন পথ দেখাল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় সাঁওতালডিহি থানার পাবড়া গ্রামের কাছে ওই বধূকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই খবর দেন থানায়। পুলিশের একটি টহলদারী গাড়ি সেই সময়ে পাবড়া গ্রামের আশেপাশে ছিল। তাঁরাই উদ্ধার করে ওই বধূকে নিয়ে আসে থানায়।
এতো গেল উদ্ধারের কাহিনি। কিন্তু ঘরে ফেরা?
থানায় নিয়ে আসার পর, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বধূ প্রথমে নিজের বিষয়ে কিছুই জানাতে রাজী হননি। পরে মহিলা পুলিশকর্মীরা তাঁর সঙ্গে গল্পগুজব করে তাঁকে স্বাভাবিক করে তোলে। তারপরেই নাম পরিচয় জানা যায় তাঁর। সেদিনই সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ উদ্ধারের পরে তাঁর ছবি ও বিবরণ সহ বিশদে জেলা পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপস গ্রুপে জানিয়ে দেন সাঁওতালডিহি থানার ওসি ত্রিগুনা রায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই রঘুনাথপুর থানার ওসি দীপঙ্কর সরকারের মাধ্যমে ওই বধূর মামারবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ হয় থানার। হোয়াটস অ্যাপে ছবি ও বিবরণ দেখে একইভাবে কাশীপুর থানার ওসি কবিরঞ্জন সিংহ যোগাযোগ করেন বধূর স্বামীর সঙ্গে। বধূর মামা ডাবলু দাস থানায় এসেছিলেন। তাঁকে বধূটির ছবি দেখান দীপঙ্করবাবু। ছবি দেখে মহিলাকে নিজের ভাগ্নি বলে শনাক্ত করেন ডাবলুবাবু।

পুলিশ ও ওই বধূর পরিবার সূত্রে খবর, বছর তেইশের ওই বধূ কাশীপুরের শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন গত ১৮ জুলাই। পুলিশ জানিয়েছে, বধূর মামার বাড়ি রঘুনাথপুর থানার ঝান্ডাপাড়ায়। বছর তিনেক আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল কাশীপুরে। ১৮ জুলাই সেখান থেকেই পালিয়ে যান বধূ। প্রায় একসপ্তাহ ধরে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরার পরে রবিবার বিকালে ঝাড়খন্ডের ভাগা থেকে ট্রেন ধরে তিনি নেমেছিলেন সাঁওতালডিহিতে।

পুলিশ ডাবলুবাবুকে প্রথমে সাঁওতালডিহি থানায় এসে তাঁর ভাগ্নিকে নিয়ে যেতে বলেছিল। কিন্তু তাঁদের পক্ষে ওই রাতে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে রঘুনাথপুর থেকে সাঁওতালডিহি যাওয়া সম্ভব না হওয়ায়, রাত বারোটা নাগাদ বধূকে রঘুনাথপুরে পৌঁছে দেন ত্রিগুনাবাবু। রঘুনাথপুর থানাতেই বধূকে তাঁর মামার বাড়ির লোকজনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভাগ্নিকে ফিরে পেয়ে খুশি ডাবলুবাবু। বলেন, ‘‘রাত আটটা নাগাদ রঘুনাথপুর পুলিশ জানিয়েছিল ভাগ্নিকে সাঁওতালডিহি থানার পুলিশ উদ্ধার করেছে। তার কিছু সময় পরেই পুলিশ এসে ওকে আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে যাবে ভাবিনি!”

কিন্তু ১৮ তারিখ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর কেন থানায় জানায়নি বধূর পরিবার? এ দিন ডাবলুবাবু বলেন, ‘‘ভাগ্নি নিখোঁজ হয়ে গেছে বলে ওর স্বামী জানিয়েছিল। তাঁরা বিস্তর খোঁজ করেছিলেন বলেই জানি। কিন্তু সন্ধান পাওয়া যায়নি।’’ বধূর শ্বশুরবাড়ির দাবি, পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন তাঁরা।

রঘুনাথপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্ত বলেন, ‘‘অপরাধ দমন-সহ বিভিন্ন ঘটনায় প্রতিটি থানার মধ্যে যোগাযোগ গড়ার লক্ষ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের মধ্যে নিজস্ব গ্রুপ তৈরি করেছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। আগেও বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য আদানপ্রদানের জন্য সুবিধা পাওয়া গিয়েছে। রবিবারও ওই বধূকে উদ্ধারের পরে দ্রুত তার পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া গেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

whatsapp House wife Raghunathpur Pinaki Dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE