গত দেড় দশকে রাজ্যে ব্যবসায়িক সংস্থার (রেজিস্টার্ড কোম্পানি) সংখ্যা কত বেড়েছে, কত সংস্থাই বা পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে লোকসভায় এই তথ্য জানতে চান তৃণমূল সাংসদ বাপি হালদার। মঙ্গলবার মথুরাপুরের সাংসদের প্রশ্নের জবাব দিলেন কেন্দ্রের কর্রোরেট মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হর্ষ মালহোত্রা।
কোন রাজ্যে কত ব্যবসায়িক সংস্থা রয়েছে, তা জানা যায় রেজিস্টার অফ কোম্পানিতে (আরওসি) নথিভুক্তি দেখে। কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ সালে বাংলায় নথিভুক্ত সংস্থার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২১ হাজার ৪৯৬। ২০১১ সালের মার্চে তা বেড়ে হয় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ১৫৬। ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ২৪৩।
বিজেপি-সহ বিরোধীরা আকছার অভিযোগ করে, তৃণমূলের শাসনে পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। তাদের এ-ও অভিযোগ, বহু সংস্থা ব্যবসা করার পরিবেশ না-পেয়ে পাত্তারি গুটিয়ে বাংলা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। কত সংস্থা রাজ্য ছেড়েছে, তারও পরিসংখ্যান দিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন:
তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন ছিল, শেষ পাঁচ বছরে কত সংস্থা নতুন নথিভুক্ত হয়েছে, কত সংস্থা রাজ্য ছেড়েছে। কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যে নতুন সংস্থা নথিভুক্ত হয়েছে ৭ হাজার ১৯৭টি। রাজ্য ছেড়ে গিয়েছে ৩০৬টি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে নতুন সংস্থার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। রাজ্য ছেড়েছে ২৭৩টি। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে প্রায় ৮ হাজার নতুন সংস্থা নথিভুক্ত হয়েছে। বাংলা ছেড়ে গিয়েছে ২৭০টি সংস্থা। ২০২৩ অর্থবর্ষে নতুন সংস্থা সাড়ে ৮ হাজারের বেশি। রাজ্য ছেড়েছে ৩৭১টি। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৮ হাজার ৩৫৩টি সংস্থা নতুন নথিভুক্ত হয়েছে। ছেড়ে গিয়েছে ৩৬৬টি। চলতি অর্থবর্ষে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সংস্থা নতুন নথিভুক্ত হয়েছে। রাজ্য ছেড়ে গিয়েছে ১৫৬টি।
কেন্দ্রের দেওয়া এই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করেই বিরোধীদের ভাষ্য নস্যাৎ করতে প্রচারের পরিকল্পনা করছে তৃণমূল। বাংলার শাসকদলের বক্তব্য, কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যানই বলছে, কোভিড পর্বেও রাজ্যে ব্যবসায়িক পরিবেশ বজায় ছিল। তবে অনেকের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী জমানায় কর্পোরেট আইনে নানা বাঁধুনি আনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে আরওসি-র নথিভুক্তিকরণে। তবে এই পরিসংখ্যানকে যে তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে হাতিয়ার করবে, তা স্পষ্ট।