Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

চল্লিশটি আঘাতে গুঁড়ো শিবাজীর দেহ

পা থেকে বুক পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ছোট-বড় আঘাতে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল শরীর। কিন্তু বুকের উপর থেকে মাথা পর্যন্ত কার্যত আঁচড়টুকুও নেই। ফেরারি দুর্ঘটনায় মৃত শিবাজী রায়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করে উঠে এসেছে এমনই তথ্য।

শিবাজী রায়

শিবাজী রায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০৪:৩৩
Share: Save:

পা থেকে বুক পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ছোট-বড় আঘাতে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল শরীর। কিন্তু বুকের উপর থেকে মাথা পর্যন্ত কার্যত আঁচড়টুকুও নেই। ফেরারি দুর্ঘটনায় মৃত শিবাজী রায়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করে উঠে এসেছে এমনই তথ্য।

গত ৩ জুন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হাওড়ার ডোমজু়ড়ে পাকু়ড়িয়া সেতুতে দুর্ঘটনায় পড়ে ফেরারি গাড়িটি। চালকের আসনে ছিলেন কলকাতার ব্যবসায়ী শিবাজী রায়। মুম্বই রোডের কলকাতামুখী লেন ধরে আসার সময়ে গাড়িটি পাকুড়িয়া সেতুর রেলিং-এ ধাক্কা মারে। দুমড়ে মুচড়ে যায় সাড়ে তিন কোটি টাকা দামের বিদেশি গাড়িটির ডানদিকের অংশ। ভিতরে আটকে পড়েন শিবাজী। তাঁকে উদ্ধার করতেও বিপাকে পড়েন পুলিশ কর্মীরা। শিবাজীর একটি পা গাড়ির ভাঙাচোরা অংশের সঙ্গে এমন ভাবে আটকে গিয়েছিল যে তাঁকে বার করাই যাচ্ছিল না। পরে দু’টি ক্রেন এনে গাড়িটিকে দু’দিক থেকে টেনে ফাঁক করে শিবাজীকে উদ্ধার করা হয়।

কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। সম্প্রতি ডোমজুড় থানায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, পা থেকে বুক পর্যন্ত শিবাজীবাবুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৪০টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মৃত্যুর কারণ হিসেবেও ময়নাতদন্তে এই আঘাতগুলিকে দায়ী করা হয়েছে।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দেহে এতগুলি আঘাতের চিহ্ন প্রমাণ করে কতটা গতিতে গাড়িটি এসে রেলিং-এ ধাক্কা মেরেছিল।’’ দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, সেতুতে ওঠার সময়ে সাধারণত গাড়ির গতি কম থাকে। তা হলে সেতুর আগে গাড়িটির গতি নিশ্চয়ই আরও বেশি ছিল! কী ভাবে গাড়ির গতি ওঠানামা করেছে তা জানতে ফরেন্সিক দফতরের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। সে রিপোর্ট এখনও আসেনি। দুর্ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী মেলেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, শিবাজীবাবুর সাত বন্ধুও জেরায় জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা কেউই দুর্ঘটনাটি দেখেননি।

ঘটনার সময় শিবাজীর পাশে‌ই ছিলেন তাঁর বন্ধুর মেয়ে আসনা সুরানা। গুরুতর জখম আসনাকে গত সপ্তাহেই সিঙ্গাপুরে নিয়ে গিয়েছে পরিবার। বৃহস্পতিবার আসনার কাকা অতুল সুরানা জানান, ‘‘ভাইঝিকে ভেন্টিলেটর থেকে বার করা হয়েছে। ইশারায় কথা বলতে পারছে। সময় কাটাতে গানও শুনছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE