রাত তখন প্রায় দেড়টা। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখে বাড়ি ফিরে খাবার তৈরি করছিলেন গৃহকর্তা অশোক সোনকর। আচমকাই বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চালে বিকট এক আওয়াজ শোনেন তিনি। পর মুহূর্তে অশোক দেখেন, চাল ভেঙে এক ব্যক্তি কার্যত আছড়ে পড়লেন তাঁর ঘাড়ে। চিৎকার শুনে বাড়ির অন্য সদস্যেরা ছুটে এসে দেখেন, ওই ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহের নীচে পড়ে রয়েছেন অশোক। দু’জনকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানা যায়, যিনি বাড়ির চাল ভেঙে পড়েছিলেন, তিনি পাশের একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের কেয়ারটেকার। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অশোককে ছেড়ে দেওয়া হলেও সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ওই কেয়ারটেকার।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর হাওড়ার কালীতলা লেনে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অশোকদের একতলা বাড়ির পাশেই নির্মীয়মাণ ওই বহুতলটি বেআইনি ঘোষণা করেছিল হাওড়া পুরসভা। তার পর থেকে সেটির নির্মাণকাজ বন্ধ আছে। পুলিশ জানায়, ওই বহুতলটির প্রোমোটার বাড়িটি দেখাশোনার জন্য রাজেশ প্রসাদ নামে এক ব্যক্তিকে কেয়ারটেকার হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। দশমীর রাতে রাজেশ কোনও ভাবে চারতলার খোলা সিঁড়ি থেকে অশোকের একতলা বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে আছাড় খেয়ে পড়েন। জানা গিয়েছে, অশোকের ঘাড়ে, মাথায় চোট লাগে। রাজেশের শরীরের বহু জায়গাতেও গভীর ক্ষত হয়েছে।
শুক্রবার সকালে গোলাবাড়ি থানা এলাকার ওই বাড়িতে গেলে রমেশ সোনকর নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাজেশ অত উঁচু থেকে পড়ায় তাঁর পাশাপাশি অশোকও আহত হন। আমরাই ওঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’ এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ওই বেআইনি বহুতলটি দীর্ঘ দিন অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আরও বড় অঘটন ঘটতে পারত।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই কেয়ারটেকার কী ভাবে পড়ে গেলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কিছুটা সুস্থ হলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)