Advertisement
E-Paper

সিঙ্গুরে শিল্পের দাবিতে নবান্নের উদ্দেশে যাত্রা ‘আন্দোলনকারীদের’! শুক্র থেকে শুরু হল কর্মসূচি

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আট বছর আগে সিঙ্গুরে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে মালিকদের। কিন্তু সেই জমির প্রায় ৭০০ একর এলাকায় চাষ হয় না। ওই জমিতে শিল্প করার দাবি উঠেছে।

সিঙ্গুরের জমিতে উঠল শিল্পের দাবি।

সিঙ্গুরের জমিতে উঠল শিল্পের দাবি। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ১৬:২৫
Share
Save

আগেই ঘোষণা হয়েছিল। শুক্রবার থেকে সিঙ্গুরে শিল্পের দাবিতে কর্মসূচি শুরু করল ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটি’। ওই কমিটির সদস্যেরা নবান্নের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। তার আগে তাঁরা জড়ো হয়েছিলেন সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া গ্রামে। যদিও ‘জমি পুনর্ব্যবহার কমিটি’-র এই ‘কর্মসূচি’কে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না।

২০০৬ সালে ন্যানো কারখানার জন্য এক হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় সিঙ্গুরে। জমি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেছিলেন অনিচ্ছুক কৃষকেরা। গড়ে ওঠে ‘সিঙ্গুর কৃষিজমি রক্ষা কমিটি।’ ক্রমে ওই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন রাজ্যের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আট বছর আগে সিঙ্গুরে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে মালিকদের। কিন্তু সেই জমির প্রায় ৭০০ একর এলাকায় চাষ হয় না। ওই জমি চাষযোগ্য করা না গেলে শিল্প স্থাপনের দাবি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন কৃষকদের একাংশ। এখন ২১ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়েছে ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটি’। শুক্রবার তাদের কর্মসূচির সূচনা হল। কমিটির সদস্যেরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার নবান্নে তাঁরা মোট সাত দফা দাবি পেশ করবেন। ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটি’-র যুগ্ম আহ্বায়ক দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘জমি ব্যবহার হয় তিনটে কাজে‌। হয় চাষে, নয় বসবাস, না হলে শিল্প। কিন্তু সিঙ্গুরের জমিতে চাষও হচ্ছে না। বাসও হচ্ছে না আর শিল্পও হচ্ছে না। এটাই এখন বাস্তব। চাষ হচ্ছে শুধুমাত্র ৩০০ একর জমিতে। বাকি জমি যাতে ব্যবহারযোগ্য করা যায়, তার জন্যই কমিটি তৈরি হয়েছে। আমাদের দাবি, যে জমি চাষযোগ্য হয়নি তা চাষের উপযোগী করতে হবে। নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। অধিগ্রহণের পূর্বে চাষিদের যা অধিকার ছিল, সেই অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। অধিগৃহীত জমির একশো একরে আগে ছোট ছোট শিল্প ছিল। সেগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও জমি যদি চাষযোগ্য করা না যায়, তা হলে সেখানে কারখানা করতে হবে।’’

এক সময় সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ মহাদেব দাস বর্তমানে বন্ধ্যা জমি পুনর্ব্যহার কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আগামী প্রজন্ম জানতে চাইবে, ‘তোমরা আন্দোলন করেছিলে। তোমাদের নাম ইতিহাসের পাতায় রয়েছে। কিন্তু সেই জমিতে চাষও হল না, শিল্পও হল না। তা হলে আমাদের কী লাভ হল!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাইরের লোক কে কী পেয়েছেন, সেটা বড় ব্যাপার নয়। আমাদের এখানে থাকতে হবে। আমাদেরই মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে। সেই ভেবেই সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মাধ্যমে যিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তাঁর কাছে আমরা একাধিক দাবি লিখিত আকারে তুলে ধরছি।’’

সপ্তাহখানেক আগে ওই কমিটি তৈরির সময়েই সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে জমি ফিরে এসেছে, তার ৯১ শতাংশ চাষযোগ্য। রাস্তার পাশে কিছু জমি রয়েছে। সেগুলো হোটেল, ধাবা, পেট্রল পাম্প ইত্যাদি তৈরির জন্য অনেকে কিনেছিলেন। সেই জমিতেই কেবল চাষ হচ্ছে না। মন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘যাঁরা আন্দোলন করবেন বলছেন, তাঁরা আদতে ওই জমির দালালি করেছিলেন।’’

Singur project Singur Nabanna

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}