Advertisement
০২ মে ২০২৪
Fugitive

চম্পট পকসো মামলার বন্দির, চাপান-উতোর পুলিশ ও হাসপাতালের

পুলিশ জানিয়েছে, জগাছা থানার গরপা এলাকার বাসিন্দা, সন্ন্যাসী সর্দার নামে ওই দুষ্কৃতীকে গত জানুয়ারি মাসে পকসো মামলায় গ্রেফতার করা হয়।

An image of Arrest

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:০৬
Share: Save:

পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বুধবার সাতসকালে হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে পালাল পকসো আইনে ধৃত, বিচারাধীন এক দুষ্কৃতী। বিষয়টি নিয়ে পুলিশমহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সমস্ত থানাকে সতর্ক করার পাশাপাশি পুলিশি পাহারা থাকাকালীন কী ভাবে হাসপাতাল থেকে ওই আসামি পালাল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জগাছা থানার গরপা এলাকার বাসিন্দা, সন্ন্যাসী সর্দার নামে ওই দুষ্কৃতীকে গত জানুয়ারি মাসে পকসো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তার পর থেকে আদালতের নির্দেশে ওই দুষ্কৃতী হাওড়া সংশোধনাগারেই ছিল। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, সম্প্রতি সন্ন্যাসী শ্বাসকষ্টজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েক দিন ধরে সে ছিল হাসপাতালের মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে। তাই সেখানে কড়া পুলিশি পাহারাও ছিল। কিন্তু বুধবার সকালে ওই দুষ্কৃতী কী ভাবে হাসপাতাল থেকে পালাল, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। পুলিশের দাবি, এ দিন সকালে যখন রোগীদের চা দেওয়া হচ্ছিল, তখন অনেকে ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন। মনে করা হচ্ছে, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই বন্দি পালিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালের গাফিলতি রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

হাওড়া জেলা হাসপাতালের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে হাওড়া সংশোধনাগার থেকে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত একাধিক বন্দিকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। তাদের অবিলম্বে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অন্য রোগীদের সঙ্গেই ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে। পরে একটু সুস্থ হলে হাসপাতালে বন্দিদের জন্য সংরক্ষিত সেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পুলিশি পাহারা থাকা সত্ত্বেও কোনও বন্দি পালিয়ে গেলে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি হতে পারে না।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের সন্ন্যাসী কুখ্যাত চোর। একাধিক বার তাকে বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বিবাহিত ওই দুষ্কৃতীর ছেলেমেয়েও রয়েছে। পুলিশ জানায়, সম্প্রতি চুরির পাশাপাশি টোটো চালাতে শুরু করে সে। গরপার বাসিন্দা, ক্যানসার আক্রান্ত এক মহিলাকে টোটো করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর ১৫ বছরের মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মায়ের গয়না নিয়ে পালিয়ে আসতে বলে অভিযুক্ত। পুলিশ জানায়, গত জানুয়ারি মাসে খবর আসে, সন্ন্যাসী প্রতিদিনই প্রচুর টাকা খরচ করছে। পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় ওই দুষ্কৃতীকে ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। ধৃতের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মেলে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও প্রচুর সোনার গয়না। পুলিশের দাবি, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ক্যানসার আক্রান্ত মহিলাকে খুন করে সম্পত্তি হাতানোর পরিকল্পনা ছিল তার। ওই মহিলার মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা হয়।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীর খোঁজ পেতে সব রকমের চেষ্টা চলছে। রাজ্যের সব থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ধরা পড়ে যাবে সে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE