উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহে ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধে মামলায় নতুন করে যৌন হেনস্থার ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সুবিমল পাল শুক্রবার বলেন, “নিগৃহীত মহিলা চিকিৎসকের আদালতে দেওয়া গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতেই ধৃতদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার ধারাও মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।”
নিগ্রহের ঘটনার তদন্তে আট জনের কমিটি হয়েছে হাসপাতালেও। ওই হামলার প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তার দাবিতে এ দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে কর্মবিরতি পালন করেন রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা। তবে চিকিৎসায় তেমন প্রভাব পড়েনি বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
গত সোমবার এক প্রসূতির চিকিৎসাকে কেন্দ্র করে মহিলা চিকিৎসককে মারধর করা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তিন জনের বিরুদ্ধে। তিন জনকেই পুলিশ ধরে। তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষে, এ দিন উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ফের ধৃতদের তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
নিগৃহীত চিকিৎসকও এ দিন আদালতে ছিলেন। তিনি জানান, আগামী সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন। তাঁর কথায়, “নিরাপত্তা ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হাসপাতালের তদন্ত কমিটির কাছেও জানিয়েছি। কমিটি উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে। পুলিশও জানিয়েছে, দোষীদের সাজা হবে।”
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ওই চিকিৎসক হাসপাতালে এসেছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ করে তদন্ত কমিটি। ভিডিয়ো-রেকর্ডিং করা হয়। উপাধ্যক্ষ বলেন, “তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হবে।”
এ দিন সকাল ৯টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা কর্মবিরতি চলে। রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা হাসপাতালে অবস্থানও করেন। তারই মাঝে জরুরি বিভাগে গিয়ে রোগীও দেখেন। হাসপাতালের অধ্যক্ষ সনৎকুমার ঘোষ এবং সুপার তথা উপাধ্যক্ষ সুবীরকুমার মজুমদার জানান, রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের অনুরোধ করা হয়েছিল, কালো ব্যাজ পরে প্রতিবাদ জানাতে। কিন্তু তাঁরা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। উপাধ্যক্ষের বক্তব্য, “আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা জরুরি বিভাগে এবং প্রয়োজনে ওয়ার্ডে পরিষেবা দিয়েছেন।” আন্দোলনকারীদের তরফে চিকিৎসক অমৃতা ভট্টাচার্য বলেন, “দোষীদের সাজা এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে প্রতীকী কর্মবিরতি করেছি।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এ দিন দুর্গাপুরে বলেন, “আর জি কর-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কত বড় বড় কথা বললেন! কোথায় কী! কিছুই হয়নি।” রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায়ের পাল্টা দাবি, “রাজ্য সরকার সক্রিয় বলেই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।” এ দিন অভয়া-মঞ্চের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসককে (উলুবেড়িয়া) স্মারকলিপি দেওয়া হয়। পথসভাও করা হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)