—প্রতীকী চিত্র।
অসুস্থ স্বামীকে দিনের পর দিন ভুল ওষুধ খাইয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন স্ত্রী। শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার বাঁকড়ার মুন্সিডাঙায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত স্ত্রীর নাম সাইনা পারভিন। এই খুনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে এক ওষুধের দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে। তাঁকেও খুঁজছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, ওই ওষুধের দোকানের মালিকের সঙ্গে মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠায় দু’জনে মিলে পরিকল্পনা করেই এই খুন করা হয়েছে।
খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই শুক্রবার রাতে এলাকার বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে ওই ব্যক্তির ওষুধের দোকান ও বাড়িতে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকড়ার মুন্সিডাঙা সর্দারপাড়া বকুলতলার বাসিন্দা নাসিম আলি (৩৮) বেশ কিছু দিন ধরেই
অসুখে ভুগছিলেন। তাঁকে প্রথমে একটি নার্সিংহোম ও পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে প্রায় সপ্তাহখানেক চিকিৎসাধীন ছিলেন নাসিম। সেখানেই ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। আর এর কারণ খুঁজতে গিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, কোনও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই নাসিমকে দিনের পর দিন ক্যানসারের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। এই ওষুধ খাওয়ানোর জন্যই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর পরে নাসিমের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, নাসিমের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই বেসরকারি
হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছ থেকে ক্যানসারের ওষুধ খাওয়ানোর বিষয়টি জানতে পেরে ডোমজুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, নাসেমের স্ত্রী সাইনার সঙ্গে ওই ওষুধের দোকানের মালিকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই পরিকল্পনা করে নাসিমকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়েই ডোমজুড় থানা নাসিমের দেহ ময়না
তদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ময়না তদন্তের পরে, শুক্রবার নাসিমের দেহ কবর দেওয়া হয়। রাতে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় সাইনাকে।
এ দিকে নাসিমকে খুনের অভিযোগ এলাকায় জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার রাতে বাঁকড়ার মসজিদতলায় ওই ওষুধের দোকান ও দোকানের মালিকের বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় নাসিমের পরিবার ও প্রতিবেশীরা। পৌঁছয় হাওড়া সিটি পুলিশের বিশাল বাহিনী। পুলিশের পদস্থ অফিসারদের নেতৃত্বে পরিস্থিতি সামাল
দেওয়া হয়।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে একটি অভিযোগ
পেয়ে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওষুধের দোকানের মালিকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy