—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অনুদান ফেরানোয় পুজোয় বিদ্যুতে ভর্তুকি নয়!
আর জি কর-কাণ্ডের আবহে রাজ্য সরকারের অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে হুগলির কিছু পুজো কমিটি। এর মধ্যে হুগলি শিল্পাঞ্চলের একাধিক পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি, সিইএসসি-র তরফে ফোন করে তাঁদের বলা হয়েছে, অনুদান ফেরানোয় বিদ্যুতের মাসুলে ছাড় মিলবে না। তাঁরা সিইএসসি-র ধার্য করা বিল জমা দিচ্ছেন। তবে রাজ্যের অনুদানের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থা সিইএসসি-র ছাড় না দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রতিক্রিয়া হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। তবে, এ নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব সিইএসসি কর্তারা দিতে চাননি।
হুগলিতে মূলত সিইএসসি এলাকার কিছু পুজোই অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে। তার মধ্যে কোন্নগরের মাস্টারপাড়া সর্বজনীনের কর্মকর্তাদের দাবি, সিইএসসি তাদের ফোন মারফত জানায়, যে হেতু সরকারি অনুদান তারা নিচ্ছে না, তাই বিদ্যুতের ভর্তুকি পাবে না। বিদ্যুতের ধার্য অর্থ সিইএসসি অফিসে নগদে জমা দিতে হবে। পুজো কমিটির তরফে স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগেই বিদ্যুতের বিল বাবদ ১০১০ টাকা অনলাইনে দিয়েছিলাম। সেটা ছিল ছাড়-সহ। এখন মৌখিক ভাবে আরও ৩০৩০ টাকা নগদে জমা দিতে বলেছে। কেন অনলাইনে দেওয়া যাবে না, জানি না।’’
বৈদ্যবাটীর নবগ্রাম মহিলা মিলন চক্র পুজো কমিটিরও বক্তব্য, সিইএসসি থেকে ফোন করে বলা হয়, অনুদান না নেওয়ায় ভর্তুকি মিলবে না। এর পরেই তারা ভর্তুকি বাবদ ছাড়ের ১৫৭৯ টাকা জমা দিয়েছে।
অনুদান প্রত্যাখ্যানের তালিকায় থাকা উত্তরপাড়ার আপনাদের দুর্গাপুজো কমিটির তরফে বাসুদেব হুঁই বলেন, ‘‘আমরা যখন সরকারি অনুদান ছেড়েছি, অন্য অংশ বা সুবিধার টাকাও নেব কেন? বিদ্যুতের খাতে ২১ হাজার টাকা জমা করে দেব।’’ হিন্দমোটরের বৌঠান সঙ্ঘের সভাপতি রীনা দাস বলেন, ‘‘আমরা এ দিনই বিদ্যুতের পুরো টাকা জমা করেছি।’’
বৈদ্যবাটীর চতুস্পাঠী লেন বারোয়ারির যুগ্ম সম্পাদক মলয় ঘোষ বলেন, ‘‘অনেক আগেই ৩ হাজার ৬০০ টাকা বিল মিটিয়েছি। বর্ধিত বিল সম্পর্কে কিছু জানি না। হয়তো পরে জানতে পারব!’’ ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়া বাবুরবাজার বারোয়ারিতে নিজস্ব জায়গায় পুজো হয়। বিদ্যুতের স্থায়ী মিটার রয়েছে। সারা বছরের মতোই পুজোর
সময়েও মাসিক বিল আসে। পুজো কমিটির পক্ষে অশোককুমার ঘোষ বলেন, ‘‘বর্ধিত বিলের বিষয়টা জেনেছি। যে বিল আসবে, মিটিয়ে দেব। ভর্তুকি নেব না।’’
বিদ্যুতের ভর্তুকি না দেওয়া নিয়ে সিইএসসি এবং রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের বক্তব্য, ‘‘এটা এক ধরনের ব্ল্যাকমেল, হুমকি-প্রথা। সিইএসসি আর সরকার যে এক হয়ে গিয়েছে, বোঝা যাচ্ছে। না হলে বেসরকারি সংস্থা কেন ভর্তুকি দেবে না! তাদের সঙ্গে পুজো কমিটির কী আছে?’’ বিজেপির রাজ্য এগ্জ়িকিউটিভ কমিটির সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার কি কোনও শর্ত দিয়েছিল, অনুদান না নিলে বিদ্যুতের ছাড় মিলবে না? দেয়নি। সিইএসসি সরকারের তল্পিবাহক। সরকারের কথায় ওরা এটা করছে। এতে নিজেদের স্বার্থও আছে।’’
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিইএসসি এমন কিছু বলেছে, এই ব্যাপারে কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। বিরোধীরা ভিত্তিহীন অভিযোগ তো করেই থাকে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy