বাসস্ট্যান্ডে সামান্য কিছু কারণে ঝগড়া হয়েছিল দুই প্রতিবেশীর। স্থানীয় লোকজন দু’জনকে থামিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরে চেলা কাঠ দিয়ে পিটিয়ে, ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে এক জনকে খুন করেন অপর জন। প্রায় ১৪ বছর পরে ওই অপরাধের ঘটনায় শাস্তি ঘোষণা করল হুগলির চন্দননগর আদালত। শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হল দোষীকে।
আদালত সূত্রে খবর, মৃত এবং খুনি, দু’জনের বাড়িই হুগলির তারকেশ্বরে। ২০১১ সালে তারকেশ্বর বাসস্ট্যান্ডে তাঁদের মধ্যে সামান্য কোনও কারণে বচসা হয়। তখন এক জন অন্য জনকে আধলা ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নবকুমার খাঁড়া নামে ৫৮ বছরের প্রৌঢ়ের। ঘটনার আকস্মিতায় বিস্মিত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েন প্রত্যক্ষদর্শীরা। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় কাশীনাথ মণ্ডল নামে এক প্রৌঢ়কে। মামলা গড়ায় আদালতে।
ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন উদয়শঙ্কর রায়। মামলা চলাকালীন কাশীনাথ এক বার হাই কোর্ট থেকে জামিন পান। চলতি বছরের ৭ মে চন্দননগর আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক জগৎজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলাটি উঠলে অভিযুক্তকে আবার হেফাজতে নেওয়া হয়। সম্প্রতি কাশীনাথকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। মোট ১৩ জন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে শুক্রবার বিচারক তাঁকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।
চন্দননগর আদালতের সরকারি আইনজীবী গোপাল পাত্র বলেন, ‘‘২০১১ সালের ২৬ জুলাই ঘটনাটি ঘটে। সে দিন তারকেশ্বর আমতলা বাসস্ট্যান্ডে নবকুমার খাঁড়া ও কাশীনাথ মণ্ডলের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বচসা হচ্ছে দেখে স্থানীয় দুই দোকানদার, স্বপন সামন্ত এবং সুধাংশুশেখর খাঁড়া তাঁদের থামিয়ে দেন। কিন্তু পরে কাশীনাথ কাঠ এবং ইট দিয়ে নবকুমারের মাথায় আঘাত করেন। স্থানীয়েরা রক্তাক্ত নবকুমারকে তারকেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে। আজ (শুক্রবার) সেই মামলায় সাজা ঘোষণা করল আদালত।’’
আরও পড়ুন:
মৃত নবকুমারের পুত্র তরুণকুমার খাঁড়া বলেন, ‘‘কাশীনাথ আমাদের প্রতিবেশী। ওর সঙ্গে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না আমাদের। নেহাতই রাগের বশে বাবাকে খুন করেছে ও। এর আগেও এক জনকে ছুরি মারায় অভিযুক্ত ছিল লোকটি। সে যাত্রায় ওই ব্যক্তি বেঁচে যান। কিন্তু আমার বাবাকে মেরে খুন করেছে কাশীনাথ। আজ (শুক্রবার) আদালত ওকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছে। আমরা খুশি।’’