E-Paper

দেহসৌষ্ঠবে ভুটান থেকে সোনা অনিন্দ্যের

পদক গলায় ঝুলিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাঁকরাইলের রঘুদেবপুর পঞ্চায়েতের কন্যামণিতে বাড়ি ফেরার পথে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই তাঁকে ঘিরে উল্লাস প্রকাশ করলেন এলাকাবাসী।

অরিন্দম বসু

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৮:৪৫
পুরস্কার হাতে অনিন্দ্য। নিজস্ব চিত্র

পুরস্কার হাতে অনিন্দ্য। নিজস্ব চিত্র

ছেলেবেলায় শরীর বেশ দুর্বল ছিল। সর্দি-কাশি লেগেই থাকত। রোগভোগ থেকে মুক্তির জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে ২০১০ সালে যোগব্যায়াম শুরু করেছিলেন হাওড়ার সাঁকরাইলের অনিন্দ্য মোসেল। পরে শুরু করেন দেহসৌষ্ঠব। এখন রোগভোগের বালাই নেই। বরং দেহসৌষ্ঠব তাঁকে পৌঁছে দিল বিশ্বের দরবারে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সোনা জিতে ফিরলেন তিনি। সে দিনের ‘কমজোর’ ছেলে নিজে এখন দেহসৌষ্ঠবের প্রশিক্ষক।

পদক গলায় ঝুলিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাঁকরাইলের রঘুদেবপুর পঞ্চায়েতের কন্যামণিতে বাড়ি ফেরার পথে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই তাঁকে ঘিরে উল্লাস প্রকাশ করলেন এলাকাবাসী। মালা পরিয়ে দেওয়া হল গলায়।

অনিন্দ্য জানান, পুরুষদের ১৫তম দক্ষিণ এশিয়ান দেহসৌষ্ঠব চ্যাম্পিয়নশিপ সম্প্রতি হল ভুটানের থিম্পুতে। অনিন্দ্য ছিলেন ৭৫ কেজি বিভাগে। ভারত ছাড়াও নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, বাংলাদেশ-সহ আটটি দেশের ২০ জন প্রতিযোগী ছিলেন সেই বিভাগে। প্রতিদ্বন্দ্বীদের সবাইকে পিছনে ফেলে সেরার শিরোপা ওঠে বঙ্গসন্তানের মাথায়।

ছোট থেকে অনিন্দ্যের সঙ্গে ব্যায়ামের সম্পর্ক ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শে অনিন্দ্য যখন শরীরচর্চা শুরু করেন, তখন তিনি কলেজের গণ্ডি পার হয়ে গিয়েছেন। প্রথমে ব্যায়াম। তার পরে ওজন তোলা অভ্যাস করেন। এর পরে শুরু করেন বডি বিল্ডিং বা দেহসৌষ্ঠব। জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় প্রথম যোগ দেন ২০১৩ সালে। সেখান থেকে পদক আসে। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একে একে রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় সাফল্য আসতে থাকে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামা এ বারেই প্রথম। তাতেও বাজিমাত।

প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে তিন ঘন্টা করে কঠোর অনুশীলন করেন অনিন্দ্য। খাওয়াদাওয়া নিয়েও যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হয়। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করেন চিকিৎসক স্ত্রী অর্পিতা সরকার।

অনিন্দ্যের বাবা অনাদী মোসেল ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী। নিয়মিত কাজ থাকত না তাঁর। তাই ছোটবেলা থেকেই লড়াই করে বড় হওয়া অনিন্দ্যের। এক সময় নিজের পড়াশোনা চালানোর খরচ চালাতে ছাত্র পড়িয়েছেন তিনি।

অনিন্দ্যের কথায়, ‘‘পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই।’’ দেহসৌষ্ঠবে আরও এগোতে চান তিনি। তবে তাঁর আক্ষেপ, অন্যান্য রাজ্যে দেহসৌষ্ঠবে প্রতিযোগীরা যে সরকারি সাহায্য এবং সুবিধা পান, এ রাজ্যে তা জোটে না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sankrail

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy