বৃষ্টির জলে ডুবল কামারপুকুর -বদনগঞ্জ রাজ্য সড়ক। রাজ্য সড়কের উপর উপচে জল যাচ্ছে। গোঘাটের কামারপুকুর সাতবেড়িয়া এলাকায়।
একদিনের বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হল গোঘাট ২ ব্লকের পশ্চিম প্রান্ত। মঙ্গলবার দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বৃষ্টির জল নেমে এসে কংসাবতী খালে পড়ে। সেই খাল উপচে গোঘাট ২ ব্লকের সাতবেড়িয়া, পাণ্ডুগ্রাম, পশ্চিম অমরপুর এবং তারাহাটের মাঠঘাট ভাসিয়েছে। এমনকি, সাতবেড়িয়ায় আরামবাগ-গড়বেতা রোডেও ফুটখানেক জল উঠে গিয়েছে। আবার কংসাবতী থেকে গড়ানো জল আমোদর ও তারাজুলি খাল দিয়ে গিয়ে গোঘাট ১ ব্লকের পশ্চিম মেদিনীপুর সংলগ্ন দু’টি পঞ্চায়েত— নকুন্ডা ও শ্যাওড়াতেও ঢুকে পড়েছে। মাঠে জলের স্রোত বইছে।
এই পরিস্থিতিতে আমন ধান রোপণের কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে দুই ব্লকের চাষিদের। যে জমিগুলোতে ধান রোপণ করা হয়েছিল, সেগুলি ডুবে থাকায় এবং জল না-নামায় ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। পান্ডুগ্রামের সুমন মালিক, শ্যাওড়ার সুপ্রিয় ঘোষ প্রমুখ চাষির খেদ, স্রেফ খালের জলেই প্রতি বছর ফসল নষ্ট হয়। একাধিকবার গ্রামও প্লাবিত হওয়ার নজির আছে।
গোঘাট ২ ব্লকের বিডিও দেবাশিস মণ্ডল অবশ্য বলেন, “আমরা নজর রাখছি। আতঙ্কের কিছু নেই। জল নামছে বলেই খবর নিয়েছি। সাতবেড়িয়ার সেতুর স্তম্ভগুলিতে পানা আটকে থাকায় জলের গতি বাধা পাচ্ছে। তাতেই এই হাল। পানা পরিষ্কার করার চেষ্টা চলছে।’’
সেচ দফতরের কংসাবতী ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার কোতলপুর থেকে গোঘাটের দু’টি ব্লক পর্যন্ত ওই খালটির বিস্তৃতি মোট ২৩.০৪২ কিমি। গোঘাট ২ ব্লকের বেঙ্গাই থেকে খালটির একটি শাখা সাতবেড়িয়া, পশ্চিম আমরপুর, মান্দারণ হয়ে দ্বারকশ্বর নদে পড়েছে। অন্য একটি শাখার জল গোঘাট ১ ব্লকের রঘুবাটী, গোঘাট, কুমুড়শা এবং শ্যাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শেষ হয়ে মাঠ বেয়ে দ্বারকেশ্বর এবং শিলাবতীতে পড়ে।
সেচ দফতরের কংসাবতী ডিভিশন বাঁকুড়া জেলার অধীন। ওই দফতরের গোঘাটের কামারপুকুর বিভাগের সহকারী বাস্তুকার কাঞ্চন মণ্ডল বলেন, “কংসাবতী বিভাগের খালগুলিতে এখনও মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়নি। সম্ভবত বৃষ্টির জলই খাল বেয়ে নামছে।”
ওই দফতরের বিষ্ণুপুর মহকুমা বিভাগ থেকে জানা গিয়েছে, ছোটনাগপুরের দিক থেকে কংসাবতী নদী পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া হয়ে বয়ে গিয়েছে। ওই নদীর সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরে ময়না এলাকায় কেলেঘাই নদী যুক্ত হয়েছে। এই দুই নদীর জল এবং দুই জেলার বৃষ্টির জলের চাপে কংসাবতী খাল এবং শাখাগুলি ভরে উঠতে পারে। এই জল মাঠ বেয়ে নীচে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটালে শিলাবতী এবং আরামবাগের দ্বারকেশ্বর নদে নামে। কিন্তু দুই নদ-নদীতে বর্তমানে জলের চাপ রয়েছে। ফলে, কংসাবতীর জল নামছে না। উল্টে মহকুমার নিচু এলাকা গোঘাটের দু’টি ব্লকের একাংশ জলমগ্ন হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy