প্রতীকী ছবি।
গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। অথচ, হাওড়ার সেই আশাকর্মীরা চলতি বছরের মে মাস থেকে উৎসাহ-ভাতা পাচ্ছেন না। তাঁদের অভিযোগ, জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং স্বাস্থ্যভবনে বারবার আবেদন করেও ওই ভাতা বাবদ একটি টাকাও পাননি।
সমস্যাটির কথা স্বীকার করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন্দ্র এই টাকা দেয়। তারা টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতিগত পরিবর্তন করেছে। তবে টাকা এসে গিয়েছে। তা বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই আশাকর্মীরা উৎসাহ-ভাতা পেয়ে যাবেন।’’
ওই ভাতা না পাওয়ার প্রতিবাদে তাঁরা নভেম্বর মাসে বিল করা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে আশাকর্মীরা জানান। তাঁদের বক্তব্য, টাকাই যখন পাওয়া যাচ্ছে না, তখন আর বিল জমা দিয়ে কী হবে? পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের হাওড়া গ্রামীণ জেলার সম্পাদিকা মধুমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক আশাকর্মীর পরিবারে অন্য কোনও আয় নেই। নিজেদের বেতন এবং উৎসাহ ভাতার উপরে নির্ভর করেই তাঁদের সংসার চলে। এইসব আশাকর্মীরা খুব কষ্টের মধ্যে আছেন।’’
হাওড়া জেলায় প্রায় দু’হাজার আশাকর্মী আছেন। এমনিতে আশাকর্মীরা মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা করে বেতন পান। তার বাইরে পেয়ে থাকেন উৎসাহ-ভাতা (সন্তানসম্ভবা মহিলাদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া, শিশুদের টিকাকরণের সব ডোজ় সম্পন্ন করানো, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দেওয়া প্রভৃতি কাজে)। আশাকর্মীরা জানান, কে কতটা কাজ করেন, তার উপরেই ঠিক হয় তিনি কত টাকা উৎসাহ-ভাতা পাবেন। গড়ে মাসে এক এক জন আশাকর্মী ন্যূনতম ২০০০ এবং সর্বাধিক ৪০০০ টাকা পর্যন্ত উৎসাহ-ভাতা পেয়ে থাকেন। বেতনের সঙ্গে এই টাকা যোগ হলে তাঁদের রোজগার বাড়ে। সংসারে কিছুটা সুরাহা হয়।
আশাকর্মীদের আরও অভিযোগ, তাঁদের যখন নিয়োগ করা হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল সন্তানসম্ভবাদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের টিকাকরণ, বিভিন্ন ওষুধপত্র দেওয়া এবং নানা স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ার কাজ করতে হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁদের উপরে কাজের চাপ বেড়েছে। করোনা আবহে তাঁদের নিভৃতবাসে থাকা করোনা রোগীদের তদারক করতে হয়েছে। এখন যে করোনা টিকাকরণ হচ্ছে, সেই কর্মসূচিতেও তাঁদের যোগ নিতে হচ্ছে।
শুধু তা-ই নয়, ডেঙ্গি-সহ নানারকম মশাবাহিত রোগ হলে সে বিষয়ে এলাকায় গিয়ে সমীক্ষা করা, রিপোর্ট দেওয়া— এ সবও তাঁদের আশাকর্মীদের করতে হচ্ছে। তাঁদের আরও বক্তব্য, সম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশিকা জারি করে যে সব এলাকায় আশাকর্মী নেই, সেখানেও কাজ করতে বলেছে। দিনের পর দিন কাজের চাপ বাড়ানো হলেও তাঁদের ‘উৎসাহ ভাতা’ গত মে মাস থেকে দেওয়া হচ্ছে না।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, সমস্যাটি রাজ্য জুড়ে। কেন্দ্রীয় সরকার নতুন পদ্ধতিতে উৎসাহ ভাতা দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কারণেই আশাকর্মীদের টাকা পেতে দেরি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy