Advertisement
E-Paper

BJP: কাল থেকে সিঙ্গুরে অবস্থান বিজেপির, সতর্ক প্রশাসন

মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিন সিঙ্গুরের গোপালনগরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে অবস্থান কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪৭
n সিঙ্গুরের গোপালনগরের এই জায়গাতে মঞ্চ হওয়ার কথা। রবিবার পরিদর্শনে সায়ন্তন বসু।

n সিঙ্গুরের গোপালনগরের এই জায়গাতে মঞ্চ হওয়ার কথা। রবিবার পরিদর্শনে সায়ন্তন বসু। ছবি: দীপঙ্কর দে

দিল্লি সীমানায় এক বছর ধরে কৃষক আন্দোলনের জেরে তিন কৃষি আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এ বার এ রাজ্যে ‘কৃষক-স্বার্থে’ পথে নামছে গেরুয়া শিবির।

কাল, মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিন সিঙ্গুরের গোপালনগরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে অবস্থান কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যে কর্মসূচিকে ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। রবিবারই মঞ্চ বাঁধতে গিয়ে পুলিশের কাছে বাধা পেয়েছে বিজেপি।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে আমাদের সিঙ্গুরের ধর্না আটকে রাখা যাবে না। সারের কালোবাজারি চলছে। নিম্নমানের বীজ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে আমাদের প্রতিনিধি দল কৃষকদের ফসল নষ্ট হওয়ার ক্ষতিপূরণ এবং সেচের জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুতের দাবি জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও যাবে।” এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে এসে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর হুঁশিয়ারি, ‘‘মঙ্গলবার আমাদের অনুষ্ঠানে পুলিশ যদি বাধা দেয়, তা হলে কুরুক্ষেত্র হবে। হয় সিঙ্গুর আন্দোলন হবে, না হয় এসপি অফিস ঘেরাও হবে।’’

২০০৯ সালে রাজ্যের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোপালনগরের যে জায়গায় টানা ১৪ দিন টাটা প্রকল্পে অধিগৃহীত জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান-আন্দোলন করেছিলেন, বিজেপিও একই জায়গায় নিজেদের কর্মসূচির কথা ঘোষণা করায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে।

কর্মসূচির স্থান নির্বাচন নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘“বামফ্রন্ট সরকারের অদূরদর্শিতা এবং তৃণমূলের হঠকারী আন্দোলন সিঙ্গুরে একটি শিল্প সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটিয়েছিল। কৃষকরা জমি ফেরত পেলেও জমি ফসল ফেরত পায়নি। সিঙ্গুর হয়ে উঠেছে শিল্প এবং কৃষির বধ্যভূমি। তাই সেখানেই আমরা আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

বিজেপি সূত্রের খবর, ওই অবস্থানে হুগলি ছাড়াও দুই মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও বীরভূম থেকে দলীয় কমী সমর্থকদের আসার কথা। আসতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী এবং দলের রাজ্য সভাপতিও। সায়ন্তনের দাবি, আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হবে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ বাধা দিলে দক্ষযজ্ঞ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা। বিজেপি সূত্রের খবর, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আঞ্চলিক অধিকর্তা আর পি সিংহের সঙ্গে সায়ন্তনের কথা হয়েছে।

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প অধিকর্তা স্বপনকুমার মল্লিক অবশ্য জানান, অনুমতির বিষয়টি তাঁর জানা নেই। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের দাবি, বিজেপির লোকেরা কোনও অনুমতি দেখাতে পারেননি। পুলিশের অনুমতিও নেননি।

রাজ্যে পর পর নিম্নচাপের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিদের বিনামূল্যে সার, আলুবীজ এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে বিজেপির এই কর্মসূচিকে ‘কৃষক দরদি’ সাজার চেষ্টা বলে মনে করছেন অনেকে। শমীকবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কৃষক-স্বার্থের কথা বলে যাঁরা দীর্ঘ দিন সিঙ্গুরে জাতীয় সড়ক আটকে আন্দোলন করেছিলেন, তাঁরা এখন সেখানে কৃষকের দাবিতেই আমাদের আন্দোলনে বাধা দিচ্ছেন কেন? তাঁরাও সে দিন ওই আন্দোলনের জন্য পুলিশের থেকে অনুমতি নেননি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করব। কিন্তু তাতেও তাঁদের আপত্তি। তৃণমূল সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা এতে ফের স্পষ্ট হল।”

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির আন্দোলনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সিঙ্গুরে আন্দোলন করলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হওয়া যায় না। তাঁর মতো কৃষকদের প্রতি সহানুভুতিশীল মন বিজেপি কোথায় পাবে? দিল্লির কৃষক আন্দোলনে যে ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার নথ-দাঁত বের করেছে, যে ভাবে শ’য়ে শ’য়ে কৃষক আন্দোলনে প্রাণ বলি দিয়েছেন, তাতে বিজেপির আসল চেহারাটাই মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন। যা আর কোনও মলমেই উপশম হওয়ার নয়।’’

BJP Farm Law
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy