E-Paper

কালো ধোঁয়া উড়িয়ে ভ্যানো চলছে শহরেও

লোহার খাঁচা বসিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘পুলকার’

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩৩
An image of Van

উত্তরপাড়ায় বেলাগাম ইঞ্জিন ভ্যান। নিজস্ব চিত্র।

হুগলির গ্রামাঞ্চলে পণ্য পরিবহণ বা যাত্রী পরিবহণে ইঞ্জিনভ্যান বা ভ্যানো অনেক দিন আগেই জায়গা করে নিয়েছে। কালো ধোঁয়া উড়িয়ে চলা সেই ভ্যানোর দাপট বাড়ছে জেলার পুর এলাকাগুলিতেও। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি শহরাঞ্চলে দূষণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন পরিবেশকর্মীরা।

উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া হয়ে বাঁশবেড়িয়া পর্যন্ত যে দশটি পুরসভা রয়েছে, কমবেশি সব জায়গাতেই মোটরভ্যানের দাপট দেখা যাচ্ছে। ডানকুনি, তারকেশ্বর, আরামবাগ পুরসভার মতো গ্রামঘেঁষা এলাকায় দাপট আরও বেশি। শহরাঞ্চলে মূলত মালপত্র পরিবহণে ভ্যানো ব্যবহার করা হলেও মাথায় ছাউনি দিয়ে স্কুলগাড়িও বানিয়ে নেওয়া হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। উত্তরপাড়া শহরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ওই সব ভ্যানোয় চড়ে যাতায়াত করতেওদেখা যাচ্ছে।

পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, অপরিশোধিত তেলে চলা এই মোটরভ্যান পরিবেশে ব্যাপক দূষণ ছড়ায়। মানুষের শরীরের পক্ষে ভ্যানোর ধোঁয়া অত্যন্ত ক্ষতিকর। রাস্তায় চলার কোনও রকম ছাড়পত্র নেই। অথচ, সব নিয়ম উড়িয়ে দিব্যি চলছে। পুলিশ-প্রশাসন রয়েছে চোখ বুজে। অভাব সাধারণ মানুষের সচেতনতারও। অভিভাবকেরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন ওই ইঞ্জিন ভ্যানে।

হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশ এবং চন্দননগর কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা অবশ্য এ নিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

উত্তরপাড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা দু’টি স্কুলে একাধিক ভ্যানো পড়ুয়াদের যাতায়াতের মাধ্যম। ভ্যানের উপরে লোহার খাঁচা করে পাকাপোক্ত ছাউনি বসানো হয়েছে রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য। চেহারা বদলে ভ্যানো হয়ে যাচ্ছে ‘পুলকার’। একটি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘মোটরভ্যানের সঙ্গে বিদ্যালয়ের কোনও যোগ নেই। অভিভাবকেরা সরাসরি চালকদের সঙ্গে কথা বলে মাসিক অর্থের বিনিময়ে ভ্যানো ভাড়া করেন। এ ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত।’’

উত্তরপাড়া শহরের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ভ্যানোর কালো ধোঁয়া বাচ্চাদের শরীরে ক্ষতি, পরিবেশ দূষণ করছে। তার উপরে, ভ্যানোর মজবুত ব্রেক নেই। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমাদের পুর এলাকায় ৫৫টি বিদ্যালয় আছে। বেশ কয়েকটি স্কুলের বাচ্চাদের যাতায়াতে মোটরভ্যান ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি প্রয়োজনে স্কুল-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব, যাতে এটা না হয়। পুলিশকেও বলব, বেআইনি মোটরভ্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’’

ভদ্রেশ্বর স্টেশন বাজার-সহ শহরের অন্যান্য বাজারে মালপত্র পরিবহণের ক্ষেত্রে মোটরভ্যানের ব্যবহার বেড়েছে। বিষয়টি অস্বীকার করেননি পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ মাঝে মধ্যে ধড়পাকড় করে। কিন্তু কিছু দিন বন্ধ থাকলেও পরে ফের চলে। প্রশাসনিক ভাবে নিয়ম করে পুরোপুরি বন্ধ না করলে এই সমস্যা চলবেই। সব শেষে মানুষের রুটিরুজির প্রশ্নও এসে যায়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

motor van Air pollution Chinsurah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy