E-Paper

রেল সেতুতে ফাটল, সারানোর দায় নিয়ে চাপান-উতোর দু’পক্ষে

হাওড়া স্টেশন থেকে সামান্য দূরে, ১৯৩০ সালে নির্মিত এই রেল সেতুর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। প্রথমে এই সেতুর নাম ছিল বাকল্যান্ড ব্রিজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫৫
বিপজ্জনক: হাওড়ার চাঁদমারি রেল সেতুতে ফাটল। মঙ্গলবার।

বিপজ্জনক: হাওড়ার চাঁদমারি রেল সেতুতে ফাটল। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

হাওড়ার শতাব্দী-প্রাচীন চাঁদমারি রেল সেতুর রাস্তায় বড়সড় ফাটল দেখা দেওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়াল মঙ্গলবার সকাল থেকে। এ দিন বিষয়টি হাওড়া ট্র্যাফিক পুলিশের নজরে আসার পরে রাস্তার ফাটল বরাবর স্রেফ কয়েকটি গার্ডরেল বসিয়েই দায় সারা হয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু যান চলাচল বন্ধ করা হয়নি। ফাটল মেরামতিরও কোনও চেষ্টা করা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, সেতুর যে অংশে ফাটল ধরেছে, সেটি রাজ্য পূর্ত দফতরের না রেলের, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রেল ও রাজ্যের চাপান-উতোর।

হাওড়া স্টেশন থেকে সামান্য দূরে, ১৯৩০ সালে নির্মিত এই রেল সেতুর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। প্রথমে এই সেতুর নাম ছিল বাকল্যান্ড ব্রিজ। পরে নাম হয় বাঙালবাবু সেতু। শেষে এটির নাম দেওয়া হয় চাঁদমারি সেতু। হাওড়া ময়দানের ফাঁসিতলা মোড় থেকে উত্তর হাওড়ার পিলখানার আগে দমকল কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত, প্রায় ৩০ ফুট লম্বা এই রেল সেতু দিয়ে সারা দিনে ছোট গাড়ি থেকে বাস, লরি— সবই চলাচল করে। হাওড়া শহরে যান চলাচলের ক্ষেত্রে এই সেতুর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই সেতুটির এক দিকে প্রায় ১০ ফুট লম্বা ফাটল দেখা দেওয়ার পরেও এ দিন জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঘুম ভাঙেনি বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ওই অংশ দিয়ে যান চলাচল চালু থাকলে যে কোনও সময়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিন অবশ্য হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পরে তিনি বলেন, ‘‘রেল সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হাওড়া পুরসভার নয়। যে রকম বিপজ্জনক ভাবে ফাটল ধরেছে, তাতে সেখান দিয়ে অবিরাম যান চলাচল করলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই আমি বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। সেই সঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশকেও জানিয়েছি, যাতে তারা কোনও ভাবে যান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।’’

এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের হাওড়া শাখার ডিআরএম বিশাল কপূর বলেন, ‘‘ফাটলের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু সেতুর উপরে যেখানে ফাটল ধরেছে, সেই অংশটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রেলের নয়। ওই অংশের মেরামতির দায়িত্ব রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের। পূর্ত দফতরের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।’’ রেলের পক্ষ থেকে এ দিন এমন দাবি করা হলেও তা মানতে রাজি নন পূর্ত দফতরের কর্তারা। তাঁদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ফাটল ধরেছে রেল সেতুর উপরে, যার মেরামতি একমাত্র রেলই করতে পারে।

সেতুর রাস্তায় ফাটল সারানোর দায়িত্ব নিয়ে দু’পক্ষের এই টানাপড়েনের জেরে মঙ্গলাহাটের দিন পুলিশের বসানো গার্ডরেলের উপরে ভরসা করেই যান চলাচল করে। এই প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘রেলের কাছে আমরা বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। রেল আমাদের জানিয়েছে, সেতুর নীচে ঠেকনা দেওয়ার কাজ ইতিপূর্বেই করা হয়েছে। ফলে, ফাটল চওড়া হয়ে সেতুর ভেঙে পড়ার আশঙ্কা নেই। এ দিন বিকেল পর্যন্ত রেলের তরফে ওই সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে আমাদের কিছু বলা হয়নি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Railways

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy