তিন মাসের নাতিকে ‘খুন’ ঠাকুরমার! বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার হল নিহত শিশুর দেহ। মঙ্গলবার ভোরে হাওড়ার ডোমজুড়ে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ঠাকুরমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। কেন তিনি ওই শিশুকে খুন করলেন, জানতে তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ডোমজুড়ের সলপ পীরডাঙায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত ঠাকুরমার নাম সারথী বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ নিহত খুদের মা নিজের তিন মাসের শিশুকে ঠাকুরমার কাছে রেখে শৌচাগারে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সুযোগেই নাতিকে বাড়ির সামনের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেন ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধার ছেলে ডোমজুড়েরই একটি কারখানায় নাইট ডিউটি করেন। ফলে সকাল পর্যন্ত বাড়িতে বৃদ্ধা, তাঁর পুত্রবধূ এবং নাতিই থাকতেন। মঙ্গলবার ভোরের দিকে ছেলেকে শাশুড়ির কাছে রেখে শৌচাগারে গিয়েছিলেন মা। ঘরে ছিলেন ঠাকুরমা এবং নাতি। শৌচাগার থেকে ফিরে মা দেখেন, ছেলে কোথাও নেই। তা দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন তিনি। ছুটে আসেন পাড়াপড়শিরা। শিশুটির খোঁজে চার দিকে তল্লাশি শুরু হয়। শেষমেশ ভোর ৬টা নাগাদ বাড়ির সামনের পুকুরে মৃত অবস্থায় ভেসে থাকতে দেখা যায় শিশুটিকে।
প্রতিবেশীরাই তড়িঘড়ি শিশুটিকে পুকুর থেকে তুলে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে শিশুটির ঠাকুরমার অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। বৃদ্ধাকে চেপে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই তিনি ভেঙে পড়েন। স্থানীয়দের দাবি, বৃদ্ধা নাতিকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। ডোমজুড় থানার পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে কী কারণে শিশুটিকে পুকুরে ফেলা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চলতি মাসের শুরুতেই পশ্চিম মেদিনীপুরে কন্যাসন্তান হওয়ার ‘অপরাধে’ আট দিনের নাতনিকে বিষ খাইয়েছিলেন এক ঠাকুরমা। ১১ দিন ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরে সেই শিশুকন্যা। অভিযুক্ত ঠাকুরমা এখনও জেল হেফাজতেই রয়েছেন। সেই ঘটনার পর এ বার একই রকম ঘটনা ঘটল হাওড়াতেও।