অনিয়ম: শহরে অনুমতি না থাকলেও হাওড়ার হৃষীকেশ ঘোষ লেনে রমরমিয়ে চলছে একটি খাটাল। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
শহর থেকে খাটাল উচ্ছেদের নির্দেশ ঘোষণা করা হয়েছিল বাম আমলে। কিন্তু তার পরে গত ৪০ বছরেও কোনও অজ্ঞাত কারণে উচ্ছেদ করা যায়নি উত্তর হাওড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জিটি রোড সংলগ্ন হৃষীকেশ ঘোষ লেনের একটি বড়সড় খাটাল। ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় ওই খাটাল উচ্ছেদ করতে পুরসভার কাছে বার বার আবেদন করেও ফল হয়নি। বছরের পর বছর সেই খাটালের বর্জ্য ও আবর্জনা পাশের নিকাশি
নালায় ফেলতে থাকায় এলাকার মূল নিকাশি নালাটি কার্যত বুজে গিয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই এলাকায় জল জমে যায়।
দূষণের কারণে হাওড়া শহর থেকে অনেক আগেই খাটাল উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তবু যে ক’টি রয়ে গিয়েছিল, তা-ও ধীরে ধীরে সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছিল খাটালমালিকদের। অধিকাংশ খাটাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় সড়ক সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকা অথবা গঙ্গা তীরবর্তী ফাঁকা জায়গায়। কিন্তু উত্তর হাওড়ার হৃষীকেশ ঘোষ লেন ও নারায়ণচন্দ্র ঘোষ লেনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বছরের পর বছর ওই ঘিঞ্জি এলাকায় রমরমিয়ে চলছে খাটালটি। সেই সঙ্গে পাশের নিকাশি নালায় ওই খাটালের বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলা হতে থাকায় সেটি প্রায় বুজে গিয়েছে। পুরসভার তরফে মাঝেমধ্যে ওই নালা পরিষ্কার করা হলেও এক মাসের মধ্যে অবস্থা আবার যে কে সেই হয়ে দাঁড়ায়।
ওই এলাকার এক বাসিন্দা মধুসূদন বাগ বলছেন, ‘‘দিনের পর দিন পুরসভাকে এ বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। গোটা এলাকায় দূষণের পাশাপাশি নিকাশি নালা বুজে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই এলাকায় জল জমছে। দুর্গন্ধযুক্ত ওই জল ঠেলেই যাতায়াত করতে হচ্ছে আমাদের।’’ অভিযোগ, শাসক দল তৃণমূলের কিছু নেতার মদতেই আজও উচ্ছেদ করা যায়নি ওই খাটালটি। বাসিন্দাদের একাংশের এই অভিযোগ মেনে নিচ্ছেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূলের সম্পাদক চন্দ্রনাথ সরকারও। তিনি বলেন, ‘‘দলের কিছু লোকের মদতে শহরের ভিতরে এই বেআইনি খাটাল ব্যবসা চলছে। নিকাশি নালা গোবর ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে আর আমরা জল-যন্ত্রণা ভোগ করছি। তবে এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে শুনেছি।’’
উত্তর হাওড়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই খাটাল উচ্ছেদের ব্যাপারে দীর্ঘদিন তিনি চেষ্টা করছেন বলে দাবি এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর মনোজিৎ রাফেলের। তাঁর কথায়, ‘‘আমরাও চেষ্টা করেছি খাটাল তুলতে, কিন্তু পারিনি। এখন পুরসভার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁদেরও জানিয়েছি।’’
আর পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘খাটালটির জন্য এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। অনেক সমস্যাও হচ্ছে। এ নিয়ে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু খাটাল উচ্ছেদ করলেই তো হল না, সেটিকে উপযুক্ত পুর্নবাসনের ব্যবস্থাও করতে হবে। সেটা যাতে দ্রুত করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy