স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে তৈরি শৌচাগারের দরজা বসেনি। চটের বস্তা দিয়ে আগল দেওয়া রয়েছে। প্যান উপচে মল ভাসছে। শুক্রবার দুপুরে গোঘাট ২ ব্লকের মান্দারণ পঞ্চায়েতের আরাজি-কৃত্তিবাসপুরে এক গ্রামবাসীর শৌচাগারের এই হাল দেখে প্রধানের কাছে জবাব চাইলেন কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দলের সদস্যেরা।
পরিদর্শক দলের এক প্রতিনিধির প্রশ্ন, “রিপোর্টে সব কাজ সম্পূর্ণ দেখানো হয়েছে। অথচ দরজা হয়নি কেন? চেম্বার সাফাই হয়নি কেন?” প্রধানকে নিরুত্তর দেখে তিনি আরও বলেন, “সরকারকে সঠিক রিপোর্ট দিলে প্রয়োজনীয় অর্থ মঞ্জুর হতে পারে। প্রকল্পের সঠিক রিপোর্টদিলে মানুষের ভাল হবে, পঞ্চায়েতের সুনাম হবে আবার সরকারের লক্ষ্যও সফল হবে।”
কেন্দ্রের স্বচ্ছ ভারত মিশন এবং জলজীবন প্রকল্পে কাজ খতিয়ে দেখতে গত বুধবার থেকে হুগলিতে কেন্দ্রের একটি পরিদর্শক দল ঘুরছে। জলশক্তি মন্ত্রক থেকে পাঠানো দু’জনের এই দলটি বলাগড় ব্লকের কয়েকটি জায়গায় পরিদর্শনের পরে শুক্রবার গোঘাট ২ ব্লকে আসে। আগাম জানানো তালিকা মতোই প্রথমে মান্দারণ পঞ্চায়েতের আরাজি-কৃত্তিবাসপুরে যান তাঁরা। পঞ্চায়েতে নথিপত্র খতিয়ে দেখার পর গ্রামে যান। প্রধান কৃষ্ণা দোলুই-সহ পঞ্চায়েত ও ব্লকের কিছু আধিকারিকেরাও সঙ্গে ছিলেন।
এর পরে গ্রামে জলজীবন প্রকল্পে বসানো পাম্প ঘর এবং পাইপ লাইন-সহ ট্যাপকলগুলিও খতিয়ে দেখেন তাঁরা। তাতে বেশ কিছু অসমাপ্ত কাজ অবিলম্বে শেষ করার কথা জানান। যেমন, ট্যাপকলগুলির আধিকাংশেরই চাতাল বাঁধানো নেই। জল নিকাশি ব্যবস্থা হয়নি। ফলে, ‘ধূসর জল’ ব্যবস্থাপনা ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ বিশেষ এগোয়নি। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পরিদর্শনে তাঁরা আরও কয়েক জায়গায় শৌচাগারের দরজা নেই, ট্যাপকলে জল পরছে না, এ সব দেখেন। জলজীবন প্রকল্পে সরবরাহ করা জল কতটা পরিস্রুত, তা পরীক্ষার জন্য সব ক’টি গ্রাম থেকে জলের নমুনাও নিয়ে যান।
পরিদর্শন পর্ব শেষে কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধি সুভাষকুমার চৌধুরী বলেন, “জলজীবন মিশন তহবিলের কাজের পর্যালোচনায় এসেছি আমরা। প্রকল্পের গতি, নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রকল্প রূপায়ণ হয়েছে কি না, প্রকল্প থেকে মানুষ সুফল পাচ্ছেন কি না এবং জলের গুণগত মান এবং মাথাপিছু ৫৫ লিটার জল পরিবারগুলি পাচ্ছে কি না, তা দেখে সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠাব।” আজ, শনিবার গোঘাটের কামারপুকুর পঞ্চায়েতের কাপসিট, বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের নরহরবাটী এবং কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েতের পূর্ব চাকলা গ্রামে দলটির পরিদর্শনে যাওয়ার কথা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)