E-Paper

বন্ধ হল সেই আশ্রম, হামলায় গ্রেফতার ৩

জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, এই মুহূর্তে আশ্রমটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকল অভিভাবককে নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ০৮:৪৬
ধৃতদের মুক্তির দাবিতে অভিভাবকদের বিক্ষোভ চন্দননগর থানায় । আশ্রম ছেড়ে বাড়ির পথে আবাসিকেরা।

ধৃতদের মুক্তির দাবিতে অভিভাবকদের বিক্ষোভ চন্দননগর থানায় । আশ্রম ছেড়ে বাড়ির পথে আবাসিকেরা। নিজস্ব চিত্র।

হুগলি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার বন্ধ করে দেওয়া হল চন্দননগরের বোড়াইচণ্ডীতলার সেই আশ্রম। আশ্রমের সভাপতি পরিমল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আবাসিক কিছু নাবালিকা পড়ুয়ার উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এখনও তিনি বেপাত্তা। তবে, আশ্রম চত্বরে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া এবং শিশু সুরক্ষা কমিটির (সিডব্লুসি) আধিকারিকদের দু’টি গাড়ি
ভাঙচুরের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতেই তিন আবাসিক পড়ুয়ার তিন অভিভাবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আশ্রমের পরিস্থিতির জেরে শুক্রবার বেশ কয়েক জন আবাসিক পড়ুয়াকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান অভিভাবকেরা।

জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, এই মুহূর্তে আশ্রমটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকল অভিভাবককে নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় স্কুলে ভর্তি হতে সমস্যা হলে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করবে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত পরিমলের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁদের চন্দননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। তিন জনকেই তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তাঁদের মুক্তির দাবিতে এ দিন চন্দননগর থানার সামনে জড়ো হন জনা পঞ্চাশেক অভিভাবক। তাঁদের পাশে দাঁড়ান বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউরা। ধৃতেরা ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত নয় বলে তাঁদের দাবি।

দিন কয়েক আগে শিশু সুরক্ষা কমিটি পরিমলের বিরুদ্ধে ওই আশ্রমের আবাসিক কয়েক জন নাবালিকা পড়ুয়ার উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে থানায়। পুলিশ পকসো (শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন) আইনে মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। এরপর থেকেই বেপাত্তা পরিমল। বৃহস্পতিবার ওই হোমে সিডব্লুসি-র আধিকারিকেরা অভিভাবকদের ডেকে বৈঠকে বসেন। অভিযোগ, তখনই ওই আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন অভিভাবকদের একাংশ। কিছু আবাসিকও তাতে শামিল হয়। সকলের দাবি ছিল, পরিমল নির্দোষ। পুলিশ ওই আধিকারিকদের উদ্ধারে গেলে পরিস্থিতি জটিল হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। ভাঙচুর
করা হয় সিডব্লিউসি-র দু'টি গাড়ি। পাল্টা পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশ সে কথা মানেনি। তবে, ঘটনায় একাধিক আবাসিক ও জনা কয়েক পুলিশকর্মী আহত হন। পরে আরও পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরিমলের স্ত্রী তথা আশ্রম কমিটির সদস্য আদ্যার দাবি, তাঁর স্বামী নির্দোষ। তিনি বলেন, ‘‘বছর দশেক আগেও একবার পরিমলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। আমার বিশ্বাস, এ বারেও সব সত্য সামনে আসবে।’’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘গত সপ্তাহে পরিমল বাড়ি থেকে চলে যায়। কোথায় গিয়েছে, জানি না। তবে, পরিমল দায়িত্ব নেওয়ার পর আশ্রমের উন্নতি হয়েছে। যা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। তাই পরিমলকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chandannagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy