E-Paper

বেপরোয়া বাইকে পিষ্ট তিন বছরের শিশু, বিক্ষোভে উত্তাল এলাকা

অভিযুক্ত বাইকচালককে গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার বিকেলে মল্লিকফটকে জি টি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই বাইকচালক এলাকার এক তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ, তাই পুলিশ তাঁকে ধরেও পরে ছেড়ে দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৩
চিকিৎসা চলাকালীন রাত ১২টা নাগাদ মারা যায় শিশু।

চিকিৎসা চলাকালীন রাত ১২টা নাগাদ মারা যায় শিশু। —প্রতীকী চিত্র।

বাড়ির পাশেই একটি ক্লাবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিল তিন বছরের এক শিশুকন্যা। সেই সময়ে রাস্তা দিয়ে তীব্র গতিতে আসা একটি বেপরোয়া মোটরবাইক শিশুটিকে ধাক্কা মারে। ধাক্কার অভিঘাতে রাস্তায় ছিটকে পড়ে মেয়েটি। সঙ্কটজনক অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার শালিমারের বালুঘাট এলাকায়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন রাত ১২টা নাগাদ মারা যায় ওই শিশুটি। এর পরেই এলাকায় প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযুক্ত বাইকচালককে গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার বিকেলে মল্লিকফটকে জি টি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই বাইকচালক এলাকার এক তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ, তাই পুলিশ তাঁকে ধরেও পরে ছেড়ে দিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার শালিমারের ওই ক্লাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠান চলছিল। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সাগিনা খাতুন নামে ওই শিশুটিও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সেই অনুষ্ঠান দেখছিল। ওই সময়ে এলাকারই তিন যুবক একটি মোটরবাইক নিয়ে তীব্র গতিতে সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি সজোরে ধাক্কা মারে শিশুটিকে। তার পরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ওই তিন যুবক। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে ক্লাবের লোকজন এবং এলাকার বাসিন্দারা তাড়া করে তাঁদের ধরে ফেলেন। রক্তাক্ত শিশুটিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এলাকার লোকজন বাইকচালককে পুলিশের হাতে তুলে দেন। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করার পরে ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেয়। রাতে হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যুর পরে তার দেহ ময়না তদন্তে পাঠায় বটানিক্যাল গার্ডেন থানার পুলিশ।

বেপরোয়া বাইকের ধাক্কায় শিশুটি আহত হওয়ায় এমনিতেই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। এর পরে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় তাতে যেন ঘৃতাহুতি পড়ে। শনিবার সকাল থেকেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা শালিমারে রাস্তা অবরোধ করে অভিযুক্ত যুবককে কেন ছেড়ে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। মৃত শিশুটির বাবা মহম্মদ মমতাজ বলেন, ‘‘আমার মেয়েটাকে যে মেরে ফেলল, তাকে পুলিশ ছেড়ে দিল কী করে? নেতার আশ্রিত বলেই কি ও ছাড়া পেয়ে গেল?’’ এলাকায় বিক্ষোভ দেখানোর পরে ময়না তদন্তের শেষে পুলিশ মর্গ থেকে শিশুটির দেহ নিতে এসে শালিমারের বাসিন্দারা ফের মল্লিকফটকের সামনে জি টি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরে পুলিশ এসে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘মৃত শিশুটির পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছে। কেন অভিযুক্ত যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, তা খোঁজ নিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Accidental Death Accident

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy