E-Paper

নদী সংস্কারে দেদার মাটিতে কোপ, নালিশ

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থেকে উৎপন্ন দামোদরের এই শাখা নদী দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে হুগলির ধনেখালি, পোলবা-দাদপুর এবং সিঙ্গুর ব্লকের উপর দিয়ে গিয়েছে।

সুদীপ দাস

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৮
নদী সংস্কারের কাজ করতে মাটি কাটা চলছে।

নদী সংস্কারের কাজ করতে মাটি কাটা চলছে। ছবি: তাপস ঘোষ।

ঘিয়া নদী সংস্কারের কাজে কাটা হচ্ছে মাটি। অভিযোগ, হুগলির দাদপুরে সেই সুযোগে অতিরিক্ত মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। যন্ত্রের সাহায্যে নদীর পার ঘেঁষে গাছপালা, আগাছা উপড়ে যেমন খুশি মাটি কেটে ডাম্পার বোঝাই করে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের কাজে ফেলা হচ্ছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, বেহিসেবি ভাবে মাটি কাটায় নদীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থেকে উৎপন্ন দামোদরের এই শাখা নদী দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে হুগলির ধনেখালি, পোলবা-দাদপুর এবং সিঙ্গুর ব্লকের উপর দিয়ে গিয়েছে। বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল এই নদী। মজে যাওয়ায় গত দশ বছরে পরিস্থিতি বদলেছে। দু’পারের বাসিন্দাদের বক্তব্য, যথাযথ সংস্কার হলে ঘিয়ার সুদিন ফিরবে, তাঁদেরও ভাল হবে। নচেৎ, হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা।

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই নদী সংস্কারে মাটি কাটার অনুমতি রাজ্য প্রশাসন দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে সেই কাজ চলছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিক পর্যন্ত সেই অনুমতি ছিল। তার পরেও মাটি কাটার বিরাম নেই বলে অভিযোগ। তৃণমূল পরিচালিত দাদপুরের বাবনান পঞ্চায়েতের প্রধান ভারতী মালিকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যাঁরা মাটি কাটছেন, আমাকে কিছু জানাননি। আমিও জিজ্ঞাসা করিনি।’’

জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘একটা অনুমতি রয়েছে। তবে, যথেচ্ছ মাটি কাটা হচ্ছে কি না, খোঁজ
নেওয়া হবে।’’

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) তামিল ওভিয়া এস জানান, রাজ্যস্তরের অনুমতি সাপেক্ষে ঘিয়া নদীতে ড্রেজ়িং হচ্ছে। তিনিও বলেন, ‘‘অতিরিক্ত মাটি কাটার অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

মাটি কাটার শ্রমিকদের দাবি, অনুমতি নিয়েই এই কাজ হচ্ছে বলে তাঁরা জানেন। বরাত পাওয়া সংস্থার কোনও কর্তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। ঘিয়ার মাটি কেনার কথা মানেননি দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণে যুক্ত সংস্থার কর্তারা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবনান পঞ্চায়েতের গোয়ে থেকে দাদপুর পঞ্চায়েতের তামিলা, হাঁসনান পর্যন্ত ঘিয়ার মাটিতে দেদার কোপ পড়ছে। বাবনানের এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর আগেও ঘিয়া সংস্কার হয়েছিল। তখন এ ভাবে মাটি কাটা হয়নি। এখন লুট চলছে।’’ শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত এক গ্রামবাসীর বক্তব্য, ‘‘অবৈজ্ঞানিক ভাবে মাটি কাটা চলছে। পারও কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন অবিলম্বে হস্তক্ষেপ না করলে বিপদ অবশ্যম্ভাবী।’’

রাজহাটের বাসিন্দা, কংগ্রেস নেতা মইনুল হক বলেন, ‘‘যে ভাবে মাটি কাটা চলছে, তাতে নদীর গতিপথ বদলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাসস্থান থেকে চাষের জমিরও বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা।’’ স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, আপত্তি জানালেও কখনও হুমকি, কখনও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার কথা বলে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে প্রশাসনের নজরদারির দাবি
জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dadpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy