Advertisement
E-Paper

সংক্রমিতের জন্য লাগবে অক্সিজেন, একজোট রেড আর গ্রিন ভলান্টিয়ার

রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে দুই যুবকের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২১ ০৬:৩৬
চালক শুভম, অক্সিজেন হাতে সমীরণ।

চালক শুভম, অক্সিজেন হাতে সমীরণ। নিজস্ব চিত্র।

গভীর রাত। রিষড়ার ‘গ্রিন ভলান্টিয়ার’ সমীরণ বসুর মোবাইল বেজে উঠল। ফোনের অপর প্রান্তে জনৈক শুভম পাল। তিনি ‘রেড ভলান্টিয়ার’। শুভম বললেন, ‘‘সমীরণদা, একটা ছেলের অক্সিজেন লেভেল অনেক কমে গিয়েছে। তোমার কাছে একটা সিলিন্ডার হবে?’’ সমীরণের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। নিশুত রাতে দু’জনে মিলে অক্সিজেন নিয়ে ছুটলেন সেই অনাত্মীয় যুবকের বাড়িতে। অক্সিজেন চালু করে উপশমের চেষ্টার পাশাপাশি অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থাও করলেন।

মুমূর্ষুর জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে এ ভাবেই মিলে গেল ‘রেড’ আর ‘গ্রিন’ ভলান্টিয়ার। রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে দুই যুবকের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে বিভিন্ন জেলায় সংক্রমিতদের পাশে দাঁড়াচ্ছে সিপিএমের ছাত্র-যুবদের তৈরি ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’। একই ভাবে তৃণমূলের ‘গ্রিন ভলান্টিয়ার্স’ও রাস্তায় নেমেছে। রিষড়ায় দুই সংগঠনের অন্যতম সদস্য শুভম এবং সমীরণ। বছর চব্বিশের সমীরণ এসএফআইয়ের রিষড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক এবং জেলার সাংস্কৃতিক কমিটির আহ্বায়ক। তিনি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন। তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী সমীরণ আইনজীবী। দু’জনেরই বাড়ি রিষড়ার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষনগরে।

শুভম জানান, সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। তাতে তিনি জানতে পারেন, রিষড়ারই বামুনারির বছর ত্রিশের করোনা সংক্রমিত এক যুবক শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। অক্সিজেন দরকার। শুভম তখন অক্সিজেনের খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ অক্সিজেন মেলেনি। তখন তিনি সমীরণকে ফোন করেন। সমীরণ জানান, তাঁর বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। শুভম আসতে পারেন। এর পরেই শুভম মোটরবাইক নিয়ে সমীরণের বাড়িতে যান। দু’জনে পিপিই পরে বাইকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ওই যুবকের বাড়িতে যান।

শুভম বলেন, ‘‘অক্সিমিটারে দেখি, ওই যুবকের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা চল্লিশেরও কম। সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন চালু করে দিই। অক্সিজেন যখন অতটা কমে গিয়েছে, দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার ছিল। আমরা অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করি।’’ রাত আড়াইটে নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্স আসে। ওই যুবককে ওয়ালশ হাসপাতালে রওনা করিয়ে তবে বাড়ি ফেরেন দু’জনে। তাঁরা জানান, শারীরিক অবস্থা জটিল থাকায় মঙ্গলবার সকালে ওই যুবককে হিন্দমোটরের একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়।

সমীরণ বলেন, ‘‘শুভম আমার পরিচিত। রাজনৈতিক মতপার্থক্য তো থাকতেই পারে। কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই তা বাধা হতে পারে না। শুভম বলার পরে ওঁর সঙ্গে যেতে এক বারও ভাবিনি।’’ শুভমও জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতেও এমন পরিস্থিতি এলে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy