Advertisement
E-Paper

হাতিয়ার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, যুদ্ধে মেজর

চোখের সামনে অক্সিজেনের অভাবে প্রতিবেশী, প্রিয়জনদের হারিয়ে যেতে দেখে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে পড়েছেন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়র ‘মেজর’।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২১ ০৫:৩৭
চলছে কনসেনট্রেটর তৈরির কাজ।

চলছে কনসেনট্রেটর তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র।

রণাঙ্গণ নতুন। তো কী!

চিন আর পাকিস্তান সীমান্তে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে চোখে চোখ রেখে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যিনি ‘ডিউটি’ করেছেন, সেনাবাহিনীর সেই ‘মেজর’ ঋত্বিক পালকে কি আটকানো যায়?

চোখের সামনে অক্সিজেনের অভাবে প্রতিবেশী, প্রিয়জনদের হারিয়ে যেতে দেখে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে পড়েছেন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়র ‘মেজর’। বন্ধু, সহযোগী এবং পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে নিয়ে বানিয়ে ফেলেছেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। আজ, শুক্রবার হিন্দমোটরের মেঘদূত ক্লাবের হাতে সাধারণ মানুষের জন্য তুলে দেওয়া হচ্ছে ওই যন্ত্র। এরপরেও না-থেমে এমন আরও যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনাও সারা ‘মেজর’ ও তাঁর ‘বাহিনী’র।

হিন্দমোটরের নন্দনকাননে ঋত্বিকের বাড়ি। ছুটিতে এসে কোভিড পরিস্থিতির কারণে আটকে পড়েন। চারপাশের অবস্থা খারাপ হতে দেখে পাড়ার ছেলেরা সংক্রমিতদের সাহায্যের জন্য কিছু করার প্রস্তাব নিয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলেন। শোনামাত্র ঋত্বিক ‘যুদ্ধে’ নামেন। হাতিয়ার করেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর-কেই।

ঋত্বিক জানান, তাঁরা খোঁজ গিয়ে দেখেন, যন্ত্রটির বাজারে প্রচুর দাম। আগাম টাকা দিলেও কবে যন্ত্র মিলবে, তার নিশ্চয়তা নেই। চোখের সামনে মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেন। চলতে থাকে পড়াশোনাও। তারপর খড়্গপুর আইআইটি, এনআইটি-র বন্ধু, অধ্যাপকদের সঙ্গে আলোচনা করে যন্ত্র তৈরিতে হাত দেওয়া।

সমস্যা হয়নি?

‘‘প্রচুর বাধার মুখে পড়েছি। কিন্তু জেদে অবিচল ছিলাম আমরা। কলকাতায় সব যন্ত্রাংশ না-মেলায় ভিন্‌ রাজ্য থেকে আনিয়েছি। টাকার জন্য নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলেছি। প্রতিবেশীরাও অনেকে এগিয়ে এসেছেন। আমরা এখানেই থামব না। এ বার ছোট কনসেনট্রেটর তৈরিতে হাত দেব।’’— মেজরের গলায় প্রত্যয়ের সুর।

মেজরের ওই কাজের জন্য স্থানীয় যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী অমিত পুরকায়স্থ তাঁর ব্যবসাস্থল, ওয়ার্কশেড, এমনকি নিজস্ব কর্মীদের পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছেন। মেঘদূত ক্লাবের পক্ষে সৌমিক দে বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের জন্য যন্ত্রটি শুক্রবারই চালু হয়ে যাবে। মোট তিনটি চ্যানেল থাকবে যন্ত্রের। আমরা তিনটি শয্যার ব্যবস্থা করেছি ক্লাবঘরে। অর্থাৎ, একসঙ্গে তিন জন যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারবেন।’’

চারদিকে হাহাকারের মাঝে নন্দনকানন আর মেঘদূত ক্লাবের ছেলেরা যেন উজ্বল ব্যতিক্রম! বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে দমে না গিয়ে শিরদাঁড়া সোজা রেখেছেন তাঁরা। তাঁদের নেতা যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি। যে বাহিনীর শিরদাঁড়া নোয়ানোর অভ্যাস নেই।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy