পেশার তাগিদে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়, এমন লোকজনকে করোনা-টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে টিকার প্রথম ডোজ় এখন মিলছে না। বহু বয়স্ক মানুষও এখনও টিকা পাননি। সাধারণের জন্য টিকা দেওয়া শুরু হলেও বিশেষত বয়সের ভারে ন্যুব্জ বা চলচ্ছক্তিহীন মানুষ কী ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নেবেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে না পারায় দ্বিতীয় ডোজ় নিতে পারছেন না, এমন কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
হুগলি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের বক্তব্য এমন সমস্যার কথা তাঁদের দফতরেও আসছে। ফলে, বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বয়স্ক, বিশেষত অশক্ত মানুষের টিকাকরণের ক্ষেত্রে অসুবিধা যতটা সম্ভব লাঘব করার চেষ্টা করা হবে।
শেওড়াফুলির বকুলতলার বাসিন্দা নীলিমা মিত্রের বয়স ৭৯ বছর। বাড়িতে তিনি আর তাঁর নব্বই বছরের বৌদি ঈশানী মিত্র থাকেন। অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা নীলিমাদেবীই বৌদির দেখাশোনা করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বৌদি অসুস্থ। শয্যাশায়ী। ওঁকে টিকাগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া মুশকিল। বৌদিকে ছেড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে টিকা নেওয়া আমার পক্ষেও সম্ভব নয়। অথচ, সবাই বলছেন, টিকা নেওয়া জরুরি। এ দিকে জিনিসপত্র আনতে আমাকে রাস্তায় বেরোতেই হয়। সমস্যায় পড়েছি।’’
চাঁপদানির বিধায়ক তথা বৈদ্যবাটীর পুরপ্রশাসক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘অনেক বয়স্ক লোকের পক্ষে লাইনে দাঁড়ানো সত্যিই কষ্টকর। তবে, এখন তো সাধারণ মানুষের টিকাকরণ হচ্ছে না। তা ফের চালু হলেই এই ধরনের নাগরিকদের কতটা স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে টিকা দেওয়া যায়, তা নিশ্চয়ই দেখব।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও বলেন, ‘‘বয়স্কদের সমস্যার কথা কেউ কেউ আমাদের কাছেও জানাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।’’
এ দিকে, টোটো-চালক, পরিবহণকর্মী প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের টিকাকরণ যথারীতি চলছে। দ্বিতীয় ডোজ়ের ভ্যাকসিনও চালু রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। তবে, সাধারণ মানুষ প্রথম ভ্যাকসিনের ডোজ় কবে পাবেন, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। ফলে প্রথম ডোজ়ের জন্য এখনও হন্যে হয়ে ঘুরছেন অনেকেই।