Advertisement
E-Paper

দুই জেলায় টিকার আকাল

জোগান স্বাভাবিক হবে কবে, উত্তর নেই স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৫:৪০
সিঙ্গুর এবং পান্ডুয়ার গ্রামীণ হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকা বন্ধের নোটিস।

সিঙ্গুর এবং পান্ডুয়ার গ্রামীণ হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকা বন্ধের নোটিস। ছবি: দীপঙ্কর দে ও সুশান্ত সরকার।

চাহিদার সঙ্গে জোগানের বিস্তর ফারাক। হুগলি-হাওড়া দুই জেলাতেই ভ্যাকসিনের জন্য হাহাকার চলছেই। কোনও পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা গ্রামীণ হাসপাতালে ভ্যাকসিনের ভাঁড়ার শূন্য। ভ্যাকসিনের খোঁজে এসে সাধারণ মানুষের ফিরে যাওয়া নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও শুধুমাত্র হকার, পরিবহণকর্মী বা সংবাদকর্মীরা টিকা পাচ্ছেন। জোগান স্বাভাবিক হবে কবে, উত্তর নেই স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।

ভ্যাকসিনের অভাবে শুক্রবার থেকে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে টিকাকরণ বন্ধ। সিমলাগড়ের বাসিন্দা অলোক মাঝি বলেন, ‘‘সাত দিন ধরে ঘুরছি। প্রথম দিকে প্রচুর লাইন পড়ছিল বলে টিকা পাইনি। এখন বলছে, ভ্যাকসিন নেই।’’ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য ঘুরছেন পান্ডুয়ার বিবেকানন্দনগরের কার্তিক কিস্কু। বিএমওএইচ (পান্ডুয়া) মেহেবুব হোসেন বলেন, ‘‘কয়েক দিন ভ্যাকসিন আসেনি। এলেই দেওয়া হবে।’’

সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন না থাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকাকরণ বন্ধ থাকবে।

চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে পরিবহণকর্মী, হকার, সংবাদকর্মীদের প্রথম ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় ডোজ়ও মিলছে। একই চিত্র উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ইমামবাড়ায় মঙ্গলবার কো-ভ্যাকসিন কার্যত শেষ বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষের জন্য প্রথম ডোজ় কবে চালু হবে, বলা মুশকিল।’’ ভ্যাকসিন না থাকায় হুগলি-চুঁচুড়া পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ দিন কয়েক ধরে বন্ধ। তবে, পুরসভার কমিউনিটি হলে হকারদের টিকাকরণ চলছে। উত্তরপাড়া পুরসভা পরিচালিত মহামায়া হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে টিকা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদায়ী কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে হকার এবং পরিবহণকর্মী মিলিয়ে ৭৫০ জনের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের টিকাকরণ চলছে।’’ বৈদ্যবাটী পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ছবিটাও এক।

শনিবারের পরে আরামবাগে ভ্যাকসিন সরবরাহ হয়নি। মঙ্গলবার বিকেলে বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কিছু পরিমাণ ভ্যাকসিন আসার কথা। তবে, তাতে চাহিদা মিটবে, এমন আশা তারা করছে না।

হাওড়াতেও ভ্যাকসিনের যোগান অপ্রতুল। এখানে ভ্যাকসিনের চাহিদা দৈনিক ২০ হাজার ডোজ়। মঙ্গলবার মাত্র ৫ হাজার ডোজ় এসেছে। সিএমওএইচ নিতাই মণ্ডল জানিয়েছেন, মূলত দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। খুব কম ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ় দেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে, বৈদ্যবাটী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণের ক্ষেত্রে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে বিরোধীদের পাশাপাশি সরব হয়েছেন শাসক দলের বিদায়ী কাউন্সিলরও। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা বিদায়ী কাউন্সিলর পৌষালী ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘গোটা পুর-এলাকার যত মানুষ টিকা পেয়েছেন, তার বেশিরভাগ ৫, ১০ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। প্রভাবশালী নেতার লোকেদের ভিতর থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ লাইন দিয়ে নাম লিখিয়েও পাননি।’’ পুরসভায় এ নিয়ে প্রতিবাদও করেছেন পৌষালী।

৫, ১০ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য যথাক্রমে নমিতা মাহাতো, সুবীর ঘোষ এবং প্রভাস পোদ্দার কেউই অভিযোগ মানেননি। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নমিতার দাবি, ‘‘সাধারণত স্থানীয় ওয়ার্ডের মানুষ আগে লাইনে দাঁড়ান। তাই সেখানকার বেশি মানুষ পেতে পারেন।’’ তাঁরা যাই বলুন, স্থানীয় বিধায়ক তথা বিদায়ী পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন জানান, এ বার থেকে প্রতি ওয়ার্ডের সম-সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy